সারা বাংলা

ঐতিহ্যবাহী পইলের মাছের মেলা 

১৫ জানুয়ারি সোমবার। হবিগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পইলের মাছের মেলা বসে। হাওর এলাকার দেশীয় মাছ পাওয়া যায় এ মেলায়। তাই অনেকে এ মেলায় যান। এখানে বোয়াল, আইড়, পাবদা, রুই, কাতল, চিতল, কালীবাউস, টাকি, পুটি, মাগুরসহ শতাধিক প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। 

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পইল গ্রামের ঈদগাহের কাছে বসে দেশীয় মাছের এ মেলা। মেলার বেশিরভাগ মাছ হাওর, বিল থেকে সংগ্রহ করা। এই মেলা উৎসবে রূপ নেয়। হবিগঞ্জ ছাড়াও মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, এমনকি ঢাকা থেকেও এখানে লোকের সমাগম হয়। 

মেলায় আলাপকালে বিক্রেতা কাজল মিয়া বলেন, এবার বড় আকারের দুটি বোয়াল মাছ নিয়ে এসেছেন। এগুলোর দাম হেঁকেছেন ৬০ হাজার টাকা। আব্দুল আলী নামে আরেক বিক্রেতা জানান, হাওর থেকে জীবিত বোয়াল ও আইড় মাছ এনেছেন। বিক্রির জন্য বসে আছেন। ক্রেতারা এসে দাম কষাকষি করছেন।

বিক্রেতা সাজল মিয়া বলেন, একটি রুই মাছ নিয়ে এসে ৩৫ হাজার টাকা দাম চেয়েছেন। তিনি জীবিত আইড় মাছও নিয়ে এসেছেন। এমনভাবে শতাধিক বিক্রেতা মাছ নিয়ে বসেছেন।

মাছের মেলা উপলক্ষে কৃষিজাত পণ্য, শিশু-কিশোরদের খেলনা, দেশীয় ফার্নিচার, তৈজসপত্র, সবজি ও ফল, শীতকালীন পোশাক, মিষ্টান্নসহ কয়েকশত স্টল নিয়ে মেলা জমে ওঠে।

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পইল গ্রামে ২০০ বছর আগে পৌষ সংক্রান্তিতে এ মেলা শুরু হয়। পৌষ মেলার আয়োজন করে স্থানীয় পইল ইউনিয়ন পরিষদ। প্রতি বছরের মতো এবারও পইল গ্রামের ঈদগাহের পাশে বসে মেলা বসে। এ মেলায় হবিগঞ্জের হাওর, বিল ও পুকুরের দেশীয় নানা প্রজাতির কেমিকেলমুক্ত মাছ ছাড়াও বাহ্মণবাড়িয়া, মৌলভীবাজার, সিলেট ও কিশোরগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে জেলেরা বড় বড় মাছ বিক্রি করতে আসেন।

পইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঈনুল হক আরিফ বলেন, যদিও সংক্রান্তির দিন মেলা বসে। কিন্তু মেলার আগের ও পরের দিন মিলে মেলা গড়ায় তিন দিনে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। মেলায় লোকজন নির্বিঘ্নে আসার সুযোগ করা হয়েছে। যুগ যুগ ধরে চলে আসা এ মেলা এলাকার সাধারণ মানুষের প্রাণের উৎসব।