সারা বাংলা

সাতক্ষীরায় বাড়ছে শিশু রোগী 

শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সাতক্ষীরায় দেখা দিয়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। বিশেষ করে শিশুরা ডায়রিয়া, জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও  শিশু হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি হচ্ছে। রোগীদের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 

জানা গেছে, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০টি শিশু ভর্তি হচ্ছে। আর আউটডোরে প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছে ৪০ জনেরও বেশি শিশু। সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালেও প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০টি শিশু। আউটডোরে প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছে অর্ধশতাধিক। 

সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রাম থেকে মেয়েকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা রানা হোসেন জানান, তার মেয়ে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। স্থানীয় চিকিৎসককে দেখিয়ে কাজ না হওয়ায় তিনি আজ বুধবার (১৭ জানুয়ারি) মেয়েকে সদর হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। হাসপাতালে বেড না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে ঠান্ডার মধ্যেই মেঝেতে বিছানা করেছেন তিনি।

তালা উপজেলার থেকে আসা শরিফা খাতুন জানান, তিনি তার ছেলে সন্তানকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। চিকিৎসা ভালো হলেও হাসপাতালের অব্যবস্থাপনার কারণে তিনি ক্ষুব্ধ।  

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ জয়ন্তী মন্ডল বলেন, ঠান্ডার কারণে আমাদের এখানে রোগীর চাপ বেশি। আমাদের এখানে ১১টা বেড বরাদ্দ আছে কিন্তু শিশু ভর্তি আছে ৩৫ জনেরও বেশি। অধিকাংশ শিশুই সর্দি-কাশি, জ্বর এবং শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত।

একই হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ইনচার্জ সালেহা খাতুন জানান, গত কয়েক দিনের তীব্র শীতের কারণে ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আমাদের এখানে ৩টা বেড বরাদ্দ আছে। কিন্তু, রোগী ভর্তি আছে ২৫ থেকে ২৭ জন। ফলে রোগী সামাল দিতে একটু ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. জয়ন্ত কুমার সরকার জানান, সদর হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে বেডের সংখ্যা মাত্র ১০টি। গাদাগাদি করে কিছু বেড যোগ করে হয়েছে। ফলে বেডের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫টিতে। কিন্তু এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছে ৩৮ শিশু। 

সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালের সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার ডা. মোহাম্মদ আবুল বাশার আরমান বলেন, শীতে শিশুদের কুসুম গরম পানি খাওয়াতে হবে। সুষম খাবারের পাশাপাশি তাদের ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার দিতে হবে। শিশুর ডায়রিয়া হলে স্যালাইন খাওয়াতে হবে। স্যালাইনের পানি গরম করার পর ঠান্ডা করে খাওয়াতে হবে। শিশুদের ধুলাবালি থেকে যতোটা সম্ভব দূরে রাখতে হবে।

সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন আবু সুফিয়ান রুস্তম বলেন, রোগ প্রতিরোধে শিশুদের ঠান্ডা না লাগানো এবং খাবার খাওয়ার আগে হাত ধোঁয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। অভিভাবকরা সচেতন হলে শিশুরা ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হবে না।