সারা বাংলা

চাঁদপুরে জাটকা ইলিশ নিধন থামছে না

চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীতে অসাধু জেলেদের তৎপরতায় কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না জাটকা ইলিশ নিধন। প্রতিনিয়ত উপজেলার বেশ কয়েকটি হাটবাজারসহ চরে ভাসমানভাবেই বিক্রি হচ্ছে জাটকা।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপী বেশ কয়েকটি বাজার পরিদর্শনকালে জাটকা বিক্রির তথ্য জানিয়েছেন মৎস্যজীবী নেতাসহ সুধীমহল। যদিও প্রশাসন প্রতিনিয়ত নদীতে নানানভাবে অসাধু জেলে ও অবৈধ জালের বিরুদ্ধে অপারেশন চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বেশ কিছু রাঘববোয়ালের নেতৃত্বে জাটকা কেনাবেচা চলছে। এতে জেলেরা দাদন ফাঁদে নিরুপায় হয়ে জাটকা ধরতে নদীতে নামছে। পরে রাতের আধারে জমে উঠে লাখ লাখ টাকার জাটকা কেনাবেচা। যাতে করে নদী অনেকটাই ইলিশ শূন্য হওয়ার আশঙ্কা করছেন মৎস্য সংশ্লিষ্ট নেতারা।

হাইমচরের বাসিন্দা চাঁদপুর জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক মানিক দেওয়ান বলেন, মেঘনা নদীতে বিকেল ৫টা হতে রাত ১২টা পর্যন্ত অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে জাটকা ধরা হচ্ছে। এরপর দলবেধে জেলে নৌকাগুলো জাটকা ধরার মহোৎসবের ফাঁকে ফাঁকে জাটকা নিয়ে তীরে পৌঁছায়। এরপর রাত ১০টা হতে গভীর রাত ২/৩টা পর্যন্ত গাজীপুরের মনিপুর খালের পাশে, নীলকমলের শিকদার বটেক ও হাইমচর ইউনিয়নের বারো তহবিলসহ বেশ কিছু স্পটে জমজমাট জাটকা কেনাবেচা করছে। তবে তিনি তার নিরাপত্তার স্বার্থে জাটকা সিন্ডিকেটে জড়িতদের নাম প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে দিনের বেলাতে চরভৈরবী মৎস্য আড়ত, তেলির মোড় ও চরের ভাসমান বাজারগুলোতেও জাটকা বিক্রির মহোৎসব চলতে দেখা যাচ্ছে।

হাইমচর উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের তথ্য মতে, মেঘনা তীরবর্তী হাইমচর উপজেলায় ১০ হাজার ২শ' ৪১ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। যারা বিভিন্ন সময়েই সরকারি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। এর বাইরে জাটকা নিধন ও অবৈধ জাল নিয়ে নদীতে যেসব জেলেরা নামছেন। তাদেরকে প্রতিনিয়ত আইনের আওতায় আনতে কম্বিং অপারেশনসহ নানাভাবেই আটক করে জেল জরিমানা করা হচ্ছে। সর্বশেষ জানুয়ারি মাসের ১১ হতে ১৮ তারিখ সময়ে ৪টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় ১৬টি অভিযানে ৬১০ কেজি জাটকা জব্দ, ৩ লাখ ৩২ হাজার মিটার কারেন্ট জাল এবং ৬টি মামলায় ৫জন জেলেকে নগদ ৬২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুব রশীদ বলেন, যখনই যেখান থেকে খবর পাচ্ছি সেখানেই জাটকা নিধন প্রতিরোধে পদক্ষেপ নিচ্ছি। এমনকি আমাদের বিভিন্ন অপারেশনে নিবন্ধিত কোনো জেলে যদি অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে জাটকা ধরার সাথে জড়িত থাকে; তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। একই সঙ্গে হাটবাজারগুলোতেও জাটকা বিক্রির বিষয়টি তদারকি করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।