নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে তার কথিত স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় আংশিক সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মামুনুল হককে ৫ মাস পর আদালত থেকে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালতে হাজির করে ১৩ দফায় তদন্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের আংশিক সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করেন।
নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আগামী ১৯ মার্চ পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য্য করেছেন। এই মামলায় ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৩ দফায় ২৫ জনের পূর্ণ সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। আরেকজনের আংশিক সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।
মামুনুল হকের আইনজীবী একেএম ওমর ফারুক নয়ন বলেন, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামকে জেরা করা হয়েছে। আগামী তারিখে আবারও তাকে জেরা করা হবে।
আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করেছেন আসামি পক্ষের আইনজীবী। তাকে আরও একদিন জেরা করার জন্য সময় চেয়েছেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা ইচ্ছা করেই সময়ক্ষেপণ করছেন। এ পর্যন্ত যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন সকলে বাদিনীর পক্ষে দিয়েছেন। আসামি বাদিনীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেছেন।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে মামুনুল হককে কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। সাক্ষ্য শেষে তাকে আবারও কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় মামুনুল হকের উপস্থিতিতে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার সাক্ষ্য নেন আদালত। একইসঙ্গে ওই বছরের ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলায় বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেওয়া হয়।
একই বছরের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে জান্নাত আরা ঝর্ণার সঙ্গে অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ওইসময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে তাকে ঘেরাও করেন। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ভাঙচুর করেন এবং তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান।
পরে এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের মামলা করেন ঝর্ণা। তবে ঝর্ণাকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করেন মামুনুল হক।
ঘটনার পর থেকে মামুনুল হক ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় অবস্থান করছিলেন। এরপর সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।