মাদারীপুরে খোকন চোকদার নামে এক আদম দালালের খপ্পরে পড়ে শতাধিক পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলার ৩০-৩৫টি গ্রামের শতাধিক যুবকের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন তিনি। এ ঘটনায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করার পাশাপাশি বারবার প্রশাসনের কাছে ধরনা দিয়েও টাকা পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগ উঠেছে, একাধিক মামলা হলেও অদৃশ্য কারণে ধরাছোঁয়ার বাইরে অভিযুক্ত খোকন। পুলিশ বলছে, প্রতারককে ধরতে অভিযান চলছে।
সরেজমিন জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার মাদ্রা গ্রামের মোতালেব খানের ছেলে আল-আমিন খানের কাছ থেকে বিদেশ পাঠানোর জন্য খোকন চোকদার ৭ লাখ টাকা নেন।
ওই গ্রামের রুবেল হাওলাদার ও ইমরান খানের কাছ থেকেও ৭ লাখ করে টাকা নেন। দুই মাসের মধ্যে বিদেশে নেওয়ার কথা থাকলেও আড়াই বছরেও কেউই যেতে পারেননি।
শুধু আল-আমিন, ইমরান আর রুবেল নয়। এমন শতাধিক মানুষের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন খোকন। তার আগে, স্থানীয়ভাবে এসব বিষয়ে শালিস মীমাংসা হলেও সমাধান হয়নি।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, গবাদিপশু বিক্রি, জমি বন্ধকসহ সুদে টাকা তুলে খোকনকে দেন তারা। বিশ্বাস অর্জনে সেই সময় খোকন সবাইকে বিভিন্ন ব্যাংকের ব্ল্যাংক চেক দেন। অথচ তার কোনো ব্যাংক একাউন্টই নেই। বিদেশে না নিতে পারলে পাওনা টাকা ফেরত চাইলে শুরু হয় টালবাহানা। একপর্যায়ে কোটি কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান।
আল-আমিন নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, বিদেশে নেয়নি, আর আমার পাওনা ৭ লাখ টাকাও ফেরতও দেয়নি। ধারদেনা করে টাকা দিছি। এখন খুব সমস্যার মধ্যে আছি।
ভুক্তভোগী মাইনুল হোসাইন সুজন বলেন, বিদেশে যাওয়ার জন্য খোকন চোকদারকে টাকা দেই। কিন্তু সে বিদেশ নিচ্ছে না। আমার অনেক স্বপ্ন ছিল, বিদেশে গিয়ে পরিবারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনবো। কিন্তু সেটা আর হচ্ছে না। খোকন দালালের মুখে ছিল মধু, আর অন্তরে বিষ। এই প্রতারকের কথায় আমরা একশোর বেশি মানুষ ফাঁদে পড়েছি। আমরা পাওনা টাকা ফেরত চাই, পাশাপাশি প্রতারক খোকনের বিচার চাই।
পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, বিদেশে নেওয়ার কথা বলে অসহায় মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন খোকন। ভুক্তভোগীদের ভাষ্যমতে, তিনি কয়েক কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন। অভিযুক্তকে ধরতে অভিযান চলছে।
এদিকে, অভিযোগের বিষয়ে জানতে খোকন চোকদারের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনে কল দিলে সেটিও বন্ধ পাওয়া যায়।