সারা বাংলা

কুড়াল-দা-লাঠিসহ পাঁচ জনকে ধরে পুলিশের দাবি, ‘ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল তারা’

ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় সড়কের পাশে দলবদ্ধভাবে অপেক্ষারত পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তার পাঁচ জন ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তাদের কাছ থেকে কুড়াল, ছ্যান দা ও লাঠির মতো অস্ত্র উদ্ধারের তথ্যও জানানো হয়েছে। 

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলার জামগড়া চৌরাস্তার সাউথ বেঙ্গল সিএনজি স্টেশনের সামনে থেকে তাদের আটকের পর এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেন সংশ্লিষ্ট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অমিতাভ চৌধুরী। পরে বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) তিনি বাদী হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি গ্রহণের অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করেন।

গ্রেপ্তাররা পাঁচ জন হলেন- গাজীপুরের কাশিমপুরের বাগবাড়ি এলাকার জিসান মণ্ডল (২৪) ও রাজু আহম্মেদ (২৪), বগুড়ার শেরপুরের রনবীরবালা ও বর্তমানে আশুলিয়া নরসিংহপুরের বাসিন্দা আব্দুল মমিন (২৫), বগুড়ার শেরপুরের ও বর্তমানে আশুলিয়ার গোরাট এলাকার বাসিন্দা মো. নয়ন ইসলাম (২৩), নীলফামারীর ডিমলার ও বর্তমানে আশুলিয়ার বাসিন্দা মো. সৈনিক ইসলাম শাহীন (২৮)।

পুলিশের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় বাদী পুলিশ কর্মকর্তা জানতে পারেন জামগড়া ওই জায়গায় কতিপয় কয়েকজন ডাকাতির প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন। বিষয়টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) জানিয়ে ওই এলাকায় দায়িত্বরত আরেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিপুল হোসেনসহ তার সঙ্গীয় ফোর্সদের নিয়ে সেখানে গিয়ে তিন জনকে প্রাইভেট কারের ভেতর থেকে গ্রেপ্তার করেন। তখন প্রাইভেট কারের পেছনের সিটে থাকা দুজন, মোটরসাইকেলে থাকা তিন জন ও প্রাইভেট কারের সামনে অপেক্ষারত আরও ২-৩ জন সেখান থেকে পালিয়ে যায়। গ্রেপ্তাররা জিজ্ঞাসাবাদে তাদের অপর সহযোগীদের নাম পুলিশকে জানায়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, সেখানে উপস্থিত থাকা স্থানীয় দুই জন ও এক পুলিশ সদস্যের সামনে গ্রেপ্তার জিসান মণ্ডল প্রাইভেট কারের চালকের পাশের আসনের নিচ থেকে একটি ছ্যান দা, কোমরে গোঁজা সুইচ গিয়ার বের করে দেন। অন্য গ্রেপ্তাররাও আসনের নিচ থেকে অন্যান্য অস্ত্র বের করে দেন। আর ডিকির পেছন থেকে লাঠিটি উদ্ধার করা হয়। আর পালিয়ে যাওয়ার সময় ফেলে যাওয়া মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয় বলেও জানায় পুলিশ।

পুলিশ ওই অভিযোগে আরও জানায়, উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটের দিকে জব্দ তালিকা প্রস্তুত ও আটকদের হেফাজতে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িতের কথা স্বীকার করে। এরপর তাদের দেওয়া তথ্যে আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরও দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আটকের পর থানায় এনে পূর্ব মামলার ইতিহাস যাচাই করা হলে জিসান মণ্ডলের নামে ২০২৩ সালের ৬ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা (নম্বর-৭) ও একই বছরের ২৮ এপ্রিল আরেকটি  মামলার (নম্বর- ২৪) তথ্য পাওয়া যায়। রাত ১২টা ৪০ এর দিকে আটকদের বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতির মামলা করা হয়।

পুলিশের দাবি, আটকের সময় তাদের কাছ থেকে একটি গ্রে রঙের এক্সিও প্রাইভেট কার, নীল রঙের ইয়ামাহা ফেজার মোটরসাইকেল, কাঠের হাতলওয়ালা বিভিন্ন আকারের লোহার ধারালো ছ্যান দা দুটি, একটি চাইনিজ কুড়াল, কালো রঙের স্টিলের ধারালো সুইচ গিয়ার ও সাড়ে ২৬ ইঞ্চি কাঠের একটি লাঠি উদ্ধার করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জোহাব আলী বলেন, ডাকাতির প্রস্তুতিকালে প্রথমে তিন জনকে ও পরে আরও দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।