সারা বাংলা

জেলার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার সিএনজি-অটোরিকশার স্ট্যান্ড!

আর কদিন বাদেই ‘অমর একুশে ফেব্রুয়ারি’। অথচ, অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে মুন্সীগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণ। শহিদ মিনার চত্বর হয়ে উঠেছে মাদকসেবীদের অভয়ারণ্য। গড়ে উঠেছে মিশুক-সিএনজি স্ট্যান্ড। এ ছাড়াও দেখা গেছে মাদকসেবীদের ফেলে রাখা ফেনসিডিলের বোতল। সামনের অংশে গেইট ও সীমানা প্রাচীর না থাকায় বেড়েছে কুকুরের আনাগোনা। রাতের বেলায় নেই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। এতে সাধারণ মানুষের মনে জেগেছে নানা প্রশ্ন। কেন জেলার এমন গুরুত্বপূর্ণ স্থানটির এমন বেহাল দশা। এর রক্ষণাবেক্ষণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন তারা।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিন দেখা যায়, মুন্সীগঞ্জ শহরের শিল্পকলা একাডেমি সংলগ্ন জেলা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্বরে ৫০ থেকে ৬০টি অটোরিকশা, মিশুক ও সিএনজি স্ট্যান্ড করে আছে। চত্বরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে গাছের পাতা, কাগজ, বাদামের খোসা। পশ্চিম কর্নারে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে ফেনসিডিলের বোতল।

জানা যায়, প্রতি বছর শুধু একুশে ফেব্রুয়ারি এলেই শুরু হয় শহিদ মিনার ধোয়ামোছা ও সংস্কারের কাজ। বছরের বাকি সময়টায় পড়ে থাকে অযত্ন-অবহেলায়। অটোরিকশা ও সিএনজির পার্কিং হিসেবে ব্যবহার করে স্থানীয় প্রভাবশালী শ্রমিক নেতারা।

এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি ও মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সুজন হায়দার জনি বলেন, নির্মাণের পর থেকেই শহিদ মিনারটি অরক্ষিত। বারবার স্থানীয় প্রশাসনকে বিনয়ের সাথে অনুরোধ করার পরেও অজ্ঞাত কারণে শহিদ মিনারের পরিবেশ রক্ষায় উদ্যোগ গ্রহণ করেননি তারা। একদিকে সীমানা প্রাচীর না থাকায় শহিদ মিনারটি অরক্ষিত থাকায় যত্রতত্র সিএনজি ও অটোরিকশা স্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে। অপরদিকে, প্রতিদিন রাতে এখানে বসে মাদকসেবীদের আড্ডা। বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে অনেকবার জানানো হয়েছে। কিন্তু ফলাফল কিছু হয়নি। ভাষা শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর এই স্মৃতিস্মারক শুধু ২১ ফেব্রুয়ারিতেই দায়সারাভাবে পরিচ্ছন্ন করলে হবে না। শহিদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষায় বছরজুড়ে তৎপর থাকতে হবে।

মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র সোহেল রানা রানু বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আমাদের চেতনার জায়গা। কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্বরে আগে আলোর ব্যবস্থা ছিল না। আমরা ব্যবস্থা করেছি। মুন্সীগঞ্জ পৌরসভা সম সময়ই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে। কিছু মানুষ সমাজে নিকৃষ্টতম যারা, এখানে মাদক সেবন করে। আমি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সহযোগিতা চাই। 

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিফা খান বলেন, শহিদ মিনারে এমন বেহাল অবস্থা আমিও দেখেছি। এর আগেও আমি এর ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। পরিষ্কার করে সাইনবোর্ড সাঁটানো হয়েছিল। আগামী আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে এ বিষয়টি উপস্থাপন করবো। সংশ্লিষ্টদের নিয়ে এর রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা নেব।