বকেয়া বেতন পরিশোধ না করেই নারায়ণগঞ্জে ক্রোনী গ্রুপের অবন্তী কালার টেক্স লিমিটেড বন্ধ করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে ফতুল্লার বিসিক শিল্পাঞ্চলে কারখানার সামনে এই বিক্ষোভ অংশ নেন শ্রমিকরা। এসময় ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে শিল্প পুলিশ কারখানার মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে আগামী সোমবার বকেয়া বেতন পরিশোধ করে কারখানা খুলে দেওয়ার আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা সকাল ১০টার দিকে আন্দোলন থেকে সরে আসেন।
এর আগে, গত ডিসেম্বর মাসের আংশিক এবং চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে ‘বেআইনিভাবে শ্রমিক ধর্মঘট ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির’ কারণ দেখিয়ে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে মালিকপক্ষ।
আসলাম সানির মালিকানাধীন কারখানাটির ডাইং ও নিটিংসহ বিভিন্ন সেকশনে অন্তত ৭ হাজার শ্রমিক কর্মরত বলে জানিয়েছেন শিল্প পুলিশ-৪ এর পরিদর্শক (ইনটেলিজেন্স) সেলিম বাদশা।
শনিবার বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শ্রমিক নিলুফা বেগম বলেন, প্রতিদিনের মতো কাজের উদ্দেশ্যে বের হয়ে এসে দেখি কারখানা বন্ধ, ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছে না। কারখানার সামনে পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু আমাদের তো বেতন দেয়নি, কবে দেবে তাও বলেনি। বকেয়া বেতন না পেলে বাসা ভাড়া, খাবার খরচ মিটিয়ে কিভাবে চালাবো?
সেলিম মিয়া নামের অপর এক শ্রমিক বলেন, বেতন বাকি রাখার কারণে ঠিক মতো বাজার সদাই করতে পারিনি। ছেলে-মেয়েদের স্কুলের বেতনও দিতে পারছি না। কয়েক মাস ধরে কারখানার মালিক এমন করছেন। বাকি টাকা না দিয়া উল্টা কারখানা বন্ধ করে রাখছেন। এখন আমাদের আর কোনো পথ নেই।
ঘটনাস্থলে থাকা শিল্প পুলিশ-৪ এর নারায়ণগঞ্জ জেলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার গণেশ গোপাল বিশ্বাস বলেন, সকাল থেকেই শান্তিপূর্ণভাবে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। বকেয়া পরিশোধ করে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি তাদের। কারখানার মালিকের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। তিনি আগামী সোমবার বেতন দেবেন বলে জানিয়েছেন। একথা শ্রমিকদের জানালে তারা বিক্ষোভ শেষ করে বাড়ি চলে গেছেন।
এদিকে, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে শহরের চাষাঢ়ায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন রূপসী গ্রুপ অব ইন্ড্রাস্ট্রিজের পোশাক কারখানার শতাধিক শ্রমিক। শ্রমিকরা বলেন, গত নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ৩ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। তাদের বেতন না দিয়ে কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।