মাদারীপুরের কালকিনিতে পরিছন্নতা কর্মী ডেলিভারি করানোয় মোসা. রহিমা বেগম (৩২) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলেও জানাজানি হয়ে যায়। উপজেলার সাহেবরামপুর ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে এমন ঘটেছে। হাসপাতালে ডাক্তার উপস্থিত না থাকায় ওই গৃহবধুর নরমাল ডেলিভারি করিয়েছেন পরিছন্নতা কর্মী।
এলাকা ও ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সাহেবরামপুর ইউনিয়নের ক্রোকিরচর গ্রামের মো. জুয়েল ঘরামীর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মোসা. রহিমা বেগম গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে সাহেবরামপুর ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কোনো কর্তব্যরত ডাক্তার উপস্থিত না থাকায় বুধবার গভীর রাতে শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পরিছন্নতা কর্মী উম্মে রহিমা বিজলী ও বিজলীর স্বামী নৈশ প্রহরী আরিফুর রহমান মিলে ওই গৃহবধুর নরমাল ডেলিভারি করান। এতে করে ওই গৃহবধু অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ভুক্তভোগীর স্বামী মো. জুয়েল ঘরামী বলেন, আমার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মোসা. রহিমা বেগম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে যাই। সেখানে কোনো ডাত্তার না থাকায় সেখানকার পরিছন্নতা কর্মী উম্মে রহিমা বিজলী ও বিজলীর স্বামী নৈশ প্রহরী আরিফুর রহমান মিলে নরমাল ডেলিভারি করান। ডাক্তার থাকলে আমার স্ত্রী মারা যেত না। আমি এর বিচার চাই।
অভিযুক্ত পরিছন্নতা কর্মী উম্মে রহিমা বিজলী ও বিজলীর স্বামী নৈশ প্রহরী আরিফুর রহমান বলেন, এখানে ডাক্তার না থাকায় আমরা ওই গৃহবধুর নরমাল ডেলিভারি করিয়েছি। আমরা দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শিকা নুপুর বেগম না থাকায় ডেলিভারি করিয়েছি।
দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শিকা নুপুর বেগম বলেন, আমার সপ্তাহে দুইদিন সেখানে ডিউটি রয়েছে। তাই আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম না।
আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. আব্দুল্লাহ আকিব বলেন, পরিছন্নতা কর্মী ও নৈশ প্রহরীর ডেলিভারি করার বিষয়টি জেনেছি। তবে গৃহবধুর মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার দাশ বলেন, গৃহবধুর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।