কুমিল্লা সদর হাসপাতাল থেকে চুরি যাওয়া এক নবজাতককে সাত মাস পর উদ্ধার করেছে কুমিল্লার পুলিশ বুর্যো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গতকাল সোমবার রাজধানী ঢাকা থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ওই নবজাতকের বাসার ভাড়াটিয়াসহ দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানায় পিবিআই।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মুরাদনগর উপজেলার নিয়ামতপুর এলাকার জাকির হোসেনের স্ত্রী পারভীন (৩০) ও জেলার বরুড়া উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের আব্দুল মালেকের মেয়ে জেসমিন। উদ্ধার নবজাতকটি কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার বারোপাড়া এলাকার জসিম উদ্দিন ও আয়েশা বেগম দম্পতির সন্তান।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পিবিআই কুমিল্লার একটি দল চুরি হওয়ার ৭ মাস পর এক নবজাতককে উদ্ধার করেছে। গত বছরের ১৩ আগস্ট কুমিল্লা জেনারেল (সদর) হাসপাতালের টিকিট কাউন্টারের সামনে থেকে নবজাতকটি চুরি হয়। এ ঘটনায় নবজাতকের বাবা মো. জসিম উদ্দীন কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। পিবিআই মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায়।
আরও পড়ুন: কুমিল্লার হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরি
আসামিদের বরাত দিয়ে পিআইবি জানায়, পারভীনের সঙ্গে জেসমিন কথোপকথনে হয়। সেসময় জেসমিন জানায়, তার একটি ছেলে থাকলে ভালো হতো। পারভীন জেসমিনের কথা বুঝতে পারেন। পরে পারভীন জেসমিনকে বলেন, যদি ৫০ হাজার টাকা দেয় সে একটি নবজাতক এনে দিতে পারবে। পরে তারা পরিকল্পনা করে, নবজাতককে এনে দিলে জেসমিন তাকে নিয়ে পালাবে। নবজাতকের নানি নুরজাহান বেগম শিশুটিকে নিয়ে বারান্দায় হাঁটাহাঁটি করার সময় তাদের বাসার ভাড়াটিয়া পারভীন নবজাতকের শারীরিক সমস্যার কথা বলে বড় ডাক্তার দেখানোর জন্য বলেন। নবজাতকের মাকে কিছু না জানিয়ে পারভীন নবজাতকসহ নানিকে নিয়ে হাসপাতালের টিকিট কাউন্টারে যান। এ সময় জেসমিন নবজাতকের নানিকে বলেন, আপনি বৃদ্ধ মানুষ বাচ্চা আমার কোলে দেন। বাচ্চা সঙ্গে থাকলে তাড়াতাড়ি টিকিট দেবে। নুরজাহান বেগম সরল বিশ্বাসে নবজাতককে ওই নারীর কাছে দিয়ে একপাশে দাঁড়ান। এই সুযোগে জেসমিন নবজাতকটি নিয়ে পালিয়ে যান। কিছুক্ষণ পরে পারভীনকে ওই নারীর কথা জিজ্ঞেস করলে সে তাকে দেখেনি বলে জানায়। পরে খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়।
পিবিআই কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ওই নবজাতককে ঢাকার মহাখালী বাসস্ট্যান্ড উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে আসামি জেসমিনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের তিনি স্বীকার করেন, তার সহযোগী পারভীনের কাছে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে (৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করে) ছেলে বাচ্চা ক্রয় করে। পারভীন নবজাতকের মায়ের অজান্তে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে নানীসহ শিশুটিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। পরে কৌশলে জেসমিনের কাছে নবজাতক বুঝিয়ে দিয়ে টাকা আদায় করেন। আসামিদের আদালতে পাঠানো হবে।