সারা বাংলা

মুন্সীগঞ্জে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২৬

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় অবৈধ গ্যাস সঞ্চালন লাইন উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার (৬ মার্চ) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা। এসময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ঘটনা ঘটে। এতে ৮ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেট ও টিয়ারশেলে ১৮  আন্দোলনকারী আহত হন। 

আহতরা হলেন- মুন্সীগঞ্জ (সদর-গজারিয়া) সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খায়রুল হাসান, গজারিয়া থানার ওসি রাজিব খান, এসআই আনোয়ার হোসেন, এসআই কামরুল, এএসআই মাসুম মিয়া, কনস্টেবল রাধা রমন, কনস্টেবল কাঞ্চন, কনস্টেবল মোহাম্মদ আলী শয়ন। আহত আন্দোলনকারীদের মধ্যে সাত জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- রোকেয় বেগম (৩৫), মালেকা বানু (৭০), বানু (৫৫), পারভিন (৪৭), ইসরাক হোসেন (২২), আকাশ (২৪) এবং রিয়াদ হোসেন (২৮)। তারা সবাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, কোনো ঘোষণা ছাড়াই গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার অধিকাংশ এলাকার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। ফলে দুর্ভোগে পড়েন বৈধ গ্রাহকরা। একই সঙ্গে কয়েকটি শিল্প কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তিতাসের লোকজন বাউশিয়া ইউনিয়নের দড়ি বাউশিয়া এলাকায় অবৈধ সঞ্চালন লাইন উচ্ছেদ করতে আসেন। এসময় স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়েন তারা। আশপাশের কয়েকটি গ্রাম থেকে আসা কয়েক হাজার নারী পুরুষ তিতাস কর্মকর্তাদের ঘিরে ধরেন। পরে উত্তেজিত লোকজন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের দড়ি বাউশিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। 

প্রশাসনের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করা হলেও বিষয়টির সমাধান না হওয়ায় দুপুর ৩টার দিকে পুনরায় মহাসড়কের টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিতে চাইলে তারা হামলা চালায়। এ সময় আহত হন আট পুলিশ সদস্য। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শটগানের গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। এতে আহত হন অন্তত ১৮ জন আন্দোলনকারী।

মুন্সীগঞ্জ (সদর-গজারিয়া) সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খায়রুল হাসান বলেন, সকাল থেকেই আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু, তাতে লাভ হয়নি। কয়েকবার মহাসড়ক থেকে নামিয়ে দেওয়ার পরও তারা বারবার মহাসড়কে উঠে আসছিল। দুপুর ৩টার পর পরিস্থিতি আরোও জটিল হয়ে ওঠে। দেশি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তারা মহাসড়ক অবরোধ করে। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। পুলিশ তাদের মহাসড়ক থেকে নামিয়ে দিতে চাইলে তারা হামলা চালায়। তাদের হামলায় আমি ও গজারিয়া থানার ওসি রাজিব খানসহ ৮ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা কয়েকটি টিয়ারশেল এবং শটগানের গুলি ছুড়ি। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।