মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার খিদিরপাড়া ইউনিয়নের ঘাসভোগ গ্রামে সরকারি খালে ড্রেজার বসিয়ে মাটি লুট করা হচ্ছে। এতে ওই খালের দু-পাশের কৃষকের জমি ভেঙে খালের মধ্যে পড়ছে।
বুধবার (১৩ মার্চ) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ডহুরী তালতলা খালের সাথে সংযুক্ত হওয়া ঘাসভোগ এলাকার খালটিতে সংযোগস্থলের পাশে মিনি ড্রেজার বসিয়ে মাটি কাটা চলছে। যে স্থানে মাটি কাটা হচ্ছে তারা পাশের ঝুলছে একটি আদালত হতে নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ড।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ বুলবুলসহ ওই এলাকার কতিপয় প্রভাবশালী ব্যাক্তি এই লুটপাট চালানোয় অসহায় কৃষকরা বারবার প্রতিবাদ জানিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না । পরে তারা আদালত হতে নিষেধাজ্ঞা আনলেও তাও কর্ণপাত করছে না প্রভাবশালীরা।
এছাড়া খালের পাশের জমির মালিকরা লাল নিশানও টাঙিয়ে রেখেছেন। ড্রেজারে কাজ করতে থাকা ৩ শ্রমিক সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে খালের মধ্যে মাটি কাটার ড্রাম হতে সটকে পরেন। পরে এক শ্রমিক এসে ড্রেজারটি বন্ধ করে দিয়ে চলে যান। এ সময় ড্রেজার শ্রমিকদের সাথে কথা বলতে চাইলেও তারা কোন কথা না বলে সড়ে পরেন।
ভুক্তভোগী স্থানীয় কৃষকরা বলেন, গুগলি গ্রামের সোরহান ও স্থানীয় খিদিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য শেখ বুলবুল আহমেদ এক সপ্তাহ যাবৎ খাল থেকে মাটি কাটছেন। মাটি কাটার ফলে খালের পাশের হাসেম, হাকিম ও রফিকদের জমির মাটি ভেঙে খালে পরছে। জমির মালিকরা বারবার মাটি কাটতে বারণ করা সত্ত্বেও ড্রেজার মালিকরা কর্ণপাত করছে না।
এ ব্যাপারে স্থানীয় কৃষক মো. শরীফ বলেন, খালের মধ্যে এক সপ্তাহ ধরে মাটি কাটতাছে। স্থানীয় সোরহান আর বুলবুল মেম্বার মিলে এই মাটি কাটছে। দিনেও মাটি কাটে তারা; দিনের চেয়ে রাতে বেশি কাটে। আমাদের জমি বাড়িঘর ভেঙে পড়ে যাচ্ছে।
অপর কৃষক আ. হাকিম বলেন, সরকারি খালে মাটি কাটার সাথে বুলবুল মেম্বার ও সোরহান জড়িত। মাটি কাটার ফলে আমাগো জমি ভেঙে পড়ছে। আমরা বারবার মাটি কাটতে নিষেধ করছি তারা কোনো কথাই শুনছে না।
স্থানীয় কৃষক বৃদ্ধ রফি বলেন, আমার জমির পাশে ড্রেজার বসাইয়া সোরহান আর বুলবুল মেম্বার মাটি কাইটা নিয়ে যাইতেছে। আমি বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও তারা আমাকে কোন পাত্তাই দিচ্ছেনা। পরে আমি আদালত হতে নিষেধাজ্ঞা আনছি তাও ওরা মানছে না।
এ ব্যাপারে খিদির পাড়া ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য অভিযুক্ত শেখ বুলবুল আহমেদ বলেন, আমি না; খালের মাটি সিরাজ মৃধা সাহেব কাটতেছে। তিনি ইউএনও স্যারের কাছ হতে অনুমোদন এনেই মাটি কাটতেছে। এ ব্যাপারে সোরহানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য সিরাজ মৃধার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, খালটি দিয়ে ট্রলার চলতে পারে না; তাই মাটি কেটে স্থানীয় একটি মাঠ ভরাট করছি। এটাতো প্রশাসনের করার কথা আপনি কেন কাটছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউএনও স্যার বিষয়টি জানেন। তাকে জানিয়েই কাজ করছি। মাঠ তো ভরা শেষ এখানকার মাটি নিয়ে অন্য স্থানে বিক্রি চলছে এ বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, তেলের টাকার জন্য হয়তো অন্যস্থানে কিছু মাটি বিক্রি করা হতে পারে।
এ ব্যাপারে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, খালে মাটি কাটার কোনো অনুমতি কাউকে দেওয়া হয়নি । আমি মাটি কাটা বন্ধ করতে ওই স্থানে লোক পাঠিয়েছি।