লালমনিরহাটের কুলাঘাটে ধরলার চরাঞ্চলের চাষাবাদ যোগ্য জমিতে বালু মহালের কার্যক্রম বন্ধ ও বালু মহালের নির্দিষ্ট নিয়ম না মেনে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
সোমবার (১৮ মার্চ) ১২টার দিকে সদর উপজেলার কুলাঘাট অবদা এলাকায় বাজারে চর শিবেরকুটি ও বনগ্রাম এলাকার প্রায় ৫ শতাধিক সাধারণ জনগণ এ মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে বালু মহালের কার্যক্রম বন্ধ না করলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী দিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন বক্তারা।
মানববন্ধনে বক্তারা নানা অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, বালু মহালে অনেক জমি রেকর্ডভুক্ত খাস খতিয়ানের সম্পত্তি হিসেবে দেখানো হয়েছে। বালু মহালের কার্যক্রম পরিচালনায় স্থানীয়দের ফসলের ক্ষতি সাধন, নদীর গতিপথ পরিবর্তন, বন্যার আশংকাসহ পরিবেশ বিপর্যয়ের আশংকা রয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নদীতে আমাদের রেকর্ডভুক্ত জমি আছে। সেখানে আমরা চরাঞ্চলের চাষীরা ভূট্টাসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করে আসছি। সেই আবাদি জমিগুলোর পাশ থেকেই বালু উত্তোলন করছে ইজারাদার প্রতিষ্ঠান। ঐ স্থান থেকে ৩ ফিট গভীর পর্যন্ত বালু উত্তোলন করার কথা থাকলেও ইজারাদার প্রতিষ্ঠান সেখানে ১০-১২ ফিট গভীর পর্যন্ত বালু উত্তোলন করছেন। গভীর গর্ত করে বালু উত্তোলন করায় আমাদের ফসলি জমিগুলো এখনই সেই গর্তে ভেঙে পড়ছে। ফলে আমরা কাঙ্ক্ষিত ফসল উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
বক্তারা আরও বলেন, প্রতিদিন শত শত ট্রাকে করে বালু নিয়ে যাওয়ার কারণে একদিকে যেমন ধরলা নদীর রক্ষা বাঁধটি বিলীন হওয়ার পথে অপরদিকে চরাঞ্চলের রাস্তা-ঘাটগুলোর মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এদিকে ট্রাকগুলো চলার কারণে ধুলোবালিতে আমাদের বাড়ি-ঘর ভরে যাচ্ছে। এ কারণে শিশু ও বৃদ্ধ মানুষেরা শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছেন।
খুব দ্রুত শিবেরকুটি এলাকার ধরলা পাড়ে বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাওসহ বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দেন বক্তারা।
মানববন্ধনে চর শিবেরকুটির জনসাধারণের পক্ষে কাইয়ুম মুন্সি, মোতালেব, আতিকুল, মজিবর প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় চর শিবেরকুটির ৫ শতাধিক জনসাধারণ মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কটেশনের মাধ্যমে ধরলা পাড়ের জমিগুলোর স্তুপ আকারে জমে বালু অপসারণের জন্য নিলাম করা হয়। সেদিন বালু অপসারণ বাবদ প্রতি সেফটি শতকরা ০.৭৫ টাকা দরে ৮ লাখ ২৯ হাজার ৩ শত ৪৭ টাকা দরে সর্বনিম্ন দরদাতাকে নিলাম দেওয়া হয়।