গরমের মৌসুম শুরু হতে না হতেই বন্দরনগরী চট্টগ্রাম লোডশেডিং শুরু হয়েছে। এই নগরীতে দিনে ও রাতে ৭-৮ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ মিলছে না। রমজানে রোজা রেখে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ সরবরাহ বিভাগ জানিয়েছে, অফপিক আওয়ারে লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে না, তবে, পিক আওয়ারে ২২০ থেকে ২৫০ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং করা হচ্ছে।
কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, চট্টগ্রামে চাহিদার বিপরীতে পিক আওয়ারে ৩৮০ মেগাওয়াট থেকে ৪২০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করা হচ্ছে।
নগরবাসী জানান, চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রায় প্রতি ঘণ্টায় লোডশেডিং হচ্ছে। কখনো এক ঘণ্টা আবার কখনো দুই পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকছে না। রাতের বেলা প্রতি এক ঘণ্টা পর পর বিদ্যুৎ চলে যায়। বাসাবাড়িতে লোডশেডিং চললেও, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচে আলোকসজ্জায় ঝলমল করছে চট্টগ্রামের সবগুলো শপিং মল।
নগরীর অক্সিজেন এলাকার বাসিন্দা হাফিজুর রহমান বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে আমাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শপিং মলগুলো আলোকসজ্জার ফলে শত শত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে। সাধারণ মানুষ বাড়িতে অতি প্রয়োজনের সময় বিদ্যুৎ পাচ্ছে না।
নগরীর আগ্রাবাদ এলাকার বাসিন্দা গৃহীনি সুলতানা নিগার বলেন, আমরা ইফতার সেহেরির সময় বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। অপ্রয়োজনীয় আলোকসজ্জায় বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে শপিং মলে। তাদের কারণে আমাদের লোডশেডিংয়ের যন্ত্রনা ভোগ করতে হচ্ছে।
পিডিবির বিতরণ দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম লোডশেডিংয়ের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। এছাড়া গভীর রাত পর্যন্ত শপিং মল সমূহে কেনাকাটা অব্যাহত থাকায় রাতে বিদ্যুতের চাহিদা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। এর ফলে চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুতের সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে। যার কারণে লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামে গ্যাসভিত্তিক ৪২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার রাউজান তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট বন্ধ। শিকলবাহা ১৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রও বন্ধ। পানির অভাবে বন্ধ রয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিট। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুতের উৎপাদনে ঘাটতি রয়েছে।
পিডিবি চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) আকতার হোসাইন বলেন, পিক আওয়ারে এখন ২২০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে। তবে, অফ পিক আওয়ারে লোডশেডিং নেই। উৎপাদন বৃদ্ধি হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।