সারা বাংলা

বান্দরবানে মঙ্গল শোভাযাত্রা মধ্য দিয়ে ‘সাংগ্রাইং’ উৎসব শুরু

বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে মারমা, ম্রো, খেয়াং ও খুমিদের সর্ববৃহৎ সামাজিক উৎসব ‘সাংগ্রাইং’ শুরু হয়েছে। শনিবার(১৩ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে রাজার মাঠ থেকে শুরু হওয়া শোভাযাত্রা জেলার প্রধান সড়ক উজানী পাড়া হয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটে এসে শেষ হয়। এতে অংশ নেন বান্দরবানের সাংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিং, জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মো. রায়হান কাজেমীসহ সরকারি  কর্মকর্তারাও।

আজ সকাল থেকে নিজেদের ঐতিহ্যের পোশাকে শিশু ও তরুণ-তরুণীরা রাজার মাঠে আসতে শুরু করেন। মার্মা তরুণরা লুঙ্গি ও নানান রঙের শার্ট ও সাংগ্রাইং টি-শার্ট পরে এবং তরুণীরা বার্মিজ থামি, গলায় মালা ও নানান রঙের ছাতা নিয়ে আসতে থাকেন। চাকমা তরুণরা ধুতি পরে, মাথায় সাদা পাগড়ি বেঁধে এবং তরুণীরা পিনন, খাদি, গলায় মুদ্রার মালা পড়েন। অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর সদস্যরা ঐতিহ্যের পোশাকে মঙ্গল শোভাযাত্রা অংশ নিতে আসেন। মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটে বয়োজ্যেষ্ঠ পূজা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। 

বান্দরবান উৎসব উদযান পরিষদের নেতারা গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, শনিবার মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে সাংগ্রাইং শুরু হবে। আগামীকাল রোববার বুদ্ধাস্নান ও রাতে বিভিন্ন গ্রামে পিঠা উৎসব হবে। আগামী সোমবার রাজার মাঠে মৈত্রী পানি বর্ষণ ও শেষদিনে একই স্থানে মৈত্রী পানি বর্ষণের পাশাপাশি নিজেদের ঐতিহ্য সংস্কৃতি পোশাকে নৃত্যরত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। জেলায় ১১টি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি বাঙালিরাও এই উৎসবে অংশ নেবেন। 

পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত তিন সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী মারমাদের সাংগ্রাইং ও ত্রিপুরাদের বৈসু, চাকমা বিজুকে সম্মিলিতভাবে বৈসাবি উৎসব বলা হয়। বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চাকমা, তঞ্চঙ্গ্যা ও ত্রিপুরা বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী বছরের শেষ দুই দিন (২৯ ও ৩০ চৈত্র) ও নতুন বছরের প্রথম দিন (পয়লা বৈশাখ) এই তিন দিন বৈসু, বিজু ও বিষু উদযাপন করেন। বর্মী বর্ষপঞ্জি অনুসরণে মারমা, খেয়াং, খুমিসহ পাঁচটি জাতিগোষ্ঠী বছরের শেষ দিনে (৩০ চৈত্র) অথবা বাংলা বছরের প্রথম দিনে সাংগ্রাইং উৎসব পালন করেন। খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারী বম, পাংখুয়া ও লুসাই এই তিন জনগোষ্ঠী বৈসাবি উৎসব উদযাপন করেন না।