বাঙালির আবহমান সংস্কৃতিকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরতে অষ্টমবারের মতো আয়োজিত হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় আলপনা উৎসব ‘আলপনায় বৈশাখ ১৪৩১’। গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ডে নাম লেখানোর প্রত্যয়ে হাওর উপজেলা মিঠামইনে এই উৎসব শুরু হয়েছে। শিল্পীরা মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার সড়কটি আল্পনায় রাঙিয়ে তুলছেন।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় আল্পনা অঙ্কনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ‘আল্পনায় বৈশাখ ১৪৩১’। আল্পনা অঙ্কন কাজের উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর। এশিয়াটিক এক্সপেরিয়েন্সিয়াল মার্কেটিং লিমিটেড, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশনস লিমিটেড ও বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে রাজপথ রাঙিয়ে তুলতে মাঠে নেমেছেন শিল্পীরা।
বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে গত কয়েক বছর আল্পনা উৎসব আয়োজিত না হলেও এবার অষ্টম সংস্করণ নিয়ে স্বরূপে ফিরে এসেছে ‘আল্পনায় বৈশাখ ১৪৩১’। দেশজুড়ে বৈশাখের মুগ্ধতা ছড়িয়ে দিতে এবার বর্ষবরণে ঢাকাসহ দেশের মোট তিনটি জায়গায় ঐতিহ্যবাহী আল্পনা আঁকা হবে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে।
কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে উৎসবের প্রথম দিনের আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশিদ, কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ, বরেণ্য শিল্পী মো. মনিরুজ্জামান, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার ও ডিরেক্টর মো. মহসিন হাবিব চৌধুরী ও বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশনস লিমিটেডের চিফ হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফিসার মনজুলা মোরশেদ, মিঠামইন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার বৈষ্ণব, মিঠামইন সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শরিফ কামাল ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বিশ্বরেকর্ড গড়ার অদম্য এই চেষ্টা বিশ্বদরবারে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে। এর ফলে সম্প্রীতির বন্ধন আরো সুদৃঢ় হবে। এই বিশাল কর্মযজ্ঞ গিনেজ ওয়ার্ল্ড বুকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ আল্পনার স্বীকৃতি পাবে। কিশোরগঞ্জের এই হাওরাঞ্চল বিশ্ববাসীর নিকট নতুনভাবে পরিচিতি পাবে। উন্মোচিত হবে পর্যটন শিল্পের দ্বার।
মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার সড়ক আল্পনা সজ্জিত করতে ইতিমধ্যে ৬৫০ জন শিল্পী যোগ দিয়েছেন। আল্পনা অঙ্কন শেষ করে গিনেস ওয়ার্ল্ডে রেকর্ডের জন্য আবেদন করা হবে।
আল্পনায় বৈশাখ-১৪৩১ সমাপনী অনুষ্ঠানে হবে আগামীকাল ১৪ এপ্রিল, পয়লা বৈশাখ। এতে উপস্থিত থাকবেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এশিয়াটিক থ্রি-সিক্সটির গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইরেশ যাকের ও বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশনস লিমিটেডের চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান।
কিশোরগঞ্জ, খুলনা ও ঢাকা দেশের তিনটি ঐতিহ্যবাহী জেলায় শিল্পীর তুলিতে বৈশাখের মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেবে আল্পনায় বৈশাখ-১৪৩১ এমনটাই প্রত্যাশা আয়োজকদের।