গাজীপুরে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে কক্ষে জমে থাকা গ্যাসের বিষ্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীসহ ২ জন দগ্ধ হয়েছেন।
রোববার দুপুরে গাজীপুর সদর থানার শিমুলতলী সালনা রোড এলাকায় বিসমিল্লাহ টাওয়ারের ৮ তলা ভবনের নীচতলায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারী বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. ফারহান হাসান এবং ওই ভবনের কেয়ার টেকার খাইরুল ইসলাম। ফারহানের গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁও।
জয়দেবপুর ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. আব্দুস সামাদ এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে জানান, ৮ তলা ভবনের নীচ তলায় রোববার দুপুর ১ টার ৩০ মিনিটে এ ঘটনা ঘটেছে। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই বাড়ির লোকজন আগুন নিভিয়ে ফেলে। আগুনে আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। তাদের মধ্যে ফারহানের অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাকে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। কেয়ার টেকার খাইরুল ইসলাম শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর বাসায় ফিরে গেছেন। তিনি আশঙ্কামুক্ত।
ফারহানের সমন্ধী এসএম ফরহাদুল আবেদীন জানান, ফারহান ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিল। গ্রামের বাড়ি থেকে ফিরে শনিবার প্রথমে ভুরুলিয়া এলাকায় আমার বাড়ি উঠেছিল। সেখান থেকে রোববার দুপুরে তার বাসায় যায়। ঘরে ব্যাগ-মালামাল রাখতে গিয়ে বাতি জ্বালানোর জন্য সুইচ চাপ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উচ্চশব্দে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড হয়। এ সময় কেয়ার টেকার ফারহানকে উদ্ধার করতে গেলে তিনিও আহত হন।
তিনি বলেন, ওই ঘরে গ্যাসের লাইন বা চুলা থেকে গ্যাস লিকেজ হয়ে জমেছিল। বাতি জ্বালাতে গিয়ে সুইচের স্পার্কিং থেকে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে ধারণা করছি।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ফারহানের শরীরের ৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তার শ্বাসনালীও পুড়ে গেছে। তিনি হাসপাতালের এইচ ডি ইউ-তে ভর্তি রয়েছেন।
জয়দেবপুর ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র অফিসার আব্দুস সামাদ বলেন, নিচতলার ওই ঘরে রান্না করার গ্যাসের সিলিন্ডার পাওয়া গেছে। ঈদের ছুটিতে কক্ষের দরজা-জানালা ও তালা আটকিয়ে ফারহান বাড়িতে গিয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, সব বন্ধ থাকায় ঘরে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে গ্যাস বেরিয়ে রান্নাঘরে জমেছিল।
‘রোববার দুপুরে ওই কক্ষের অদূরেই কেয়ার টেকার রান্না করছিলেন। ওই চুলা থেকে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ কিংবা ভবনের লিফট থেকে কোনোভাবে স্পার্কি হয়ে জমে থাকা গ্যাস উচ্চ শব্দে বিষ্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়েছে।’
সদর থানার ওসি মো. রাফিউল করীম রাফি জানান, ওই কক্ষে গ্যাস সিলিন্ডার ছাড়াও তিতাস গ্যাসের লাইন রয়েছে। এখন কক্ষে জমে থাকা গ্যাস কি তিতাস গ্যাসের চুলা থেকে না-কি গ্যাস সিলিন্ডার থেকে বের হয়েছিল তা তদন্তের পর জানা যাবে।