‘বীরের কণ্ঠে বীরগাথা’ নামে সারা দেশের জীবিত ৮০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার ব্যক্তিগত যুদ্ধ অভিজ্ঞতার আর্কাইভ করার প্রকল্প হাতে নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকালে কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী গাজীপুরে প্রকল্পটির কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেনো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পারে এমন উদ্দেশ্যে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে।
প্রথম দিন কালিয়াকৈর উপজেলায় ১৪৬ জন জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ৫৭ জনের ভিডিও সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। ৯টি স্থানে প্রকল্পের কর্মকর্তারা ভিডিও সাক্ষাৎকার ধারণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে কেন, কীভাবে, কোথায় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়েছিলেন; কোন প্রশিক্ষকের অধীন কোন অস্ত্রের উপর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন; কোন সেক্টর, সাব-সেক্টরের অধীনে কতগুলো অপারেশনে কখন, কোথায়, কীভাবে অংশগ্রহণ করেন; ৯ মাসের যুদ্ধে কোথায়, কখন, কী ধরনের প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছিলেন; খাওয়া, পরা, থাকা, সেই সময়ের পরিবেশ পরিস্থিতি, স্মরণীয় ঘটনা, বিজয় উল্লাস, বাড়ি ফেরা, অস্ত্র জমা দেওয়া প্রভৃতির বর্ণনা দিতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা যেন যুদ্ধের দিনগুলোতে ফিরে গিয়েছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার জান বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা, দেশপ্রেমের মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে শত প্রতিকূলতা জয়, অসম শক্তির সঙ্গে কৌশলী যুদ্ধ, যুদ্ধক্ষেত্রের আনন্দ-বেদনার স্মৃতিচারণমূলক ভিডিওচিত্র ধারণের কাজ চলছে। সারাদেশে জীবিত ৮০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার ব্যক্তিগত যুদ্ধ-অভিজ্ঞতার আর্কাইভ করার প্রকল্প হাতে নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ‘বীরের কণ্ঠে বীরগাথা’ নামের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রজন্মের পর প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের গৌরব গাঁথা জানতে পারবে।
এই প্রকল্পের পরিচালক ডা. মো. মনিরুল ইসলাম খান বলেন, পর্যায়ক্রমে গাজীপুরের ৫ উপজেলার ১ হাজার ৬৯৬ জন জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে। ২৩ দিনব্যাপী চলবে এ জেলার এই কার্যক্রম। সারাদেশে জীবিত ৮০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার ব্যক্তিগত যুদ্ধ অভিজ্ঞতা আর্কাইভ করবো৷ এ প্রকল্প ১ বছরের।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহম্মেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজীপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. হাতেম আলী, প্রকল্প পরিচালক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আফরাজুর রহমান, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মো. মনিরুল ইসলাম খান প্রমুখ।