মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মো.আসিবুর রহমান খান এবং পাভেলুর রহমান শফিক খান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আসিবুর রহমান খান মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খান খানের বড় ছেলে। পাভেলুর রহমান শফিক খান সম্পর্কে সংসদ সদস্যের চাচাতো ভাই। ফলে এই উপজেলার নির্বাচন এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, সংসদ সদস্য শাজাহান খান খানের বড় ছেলে মো. আসিবুর রহমান খান বাংলাদেশ যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সদস্য। শাজাহান খানের চাচাতো ভাই পাভেলুর রহমান শফিক খান সদর উপজেলা পরিষদের দুই বারের সাবেক চেয়ারম্যান ও মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
আরও পড়ুন: আ.লীগের মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচন করতে মানা
প্রসঙ্গত, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে দলীয় মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের পরিবারের সদস্য এবং আত্মীয়-স্বজনকে নির্বাচন না করতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। যারা এ নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচন করবেন, তাদের বিরুদ্ধে দল বহিষ্কারাদেশসহ কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে বলে জানানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশনা পেয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৈঠকে দলের সাংগঠনিক সম্পাদকরা, দপ্তর সম্পাদক ও উপ-দপ্তর সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। ওবায়দুল কাদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দপ্তর সম্পাদককে সারা দেশে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের মধ্যে যাদের স্বজন ও পরিবারের সদস্য নির্বাচন করছেন, সে তালিকা তৈরির নির্দেশ দেন।
নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে আসিবুর রহমান জানান, জনপ্রতিনিধি ও দলের প্রতিনিধিরা তাকে প্রার্থী করেছেন। জনসেবায় জনগণের আস্থা রয়েছে তার পরিবারের ওপর। তিনি নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত তিনি মাঠেই থাকবেন।
পাভেলুর রহমান শফিক খান বলেন, আমি দুই বার উপজেলার চেয়ারম্যান ছিলাম। ছোট থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে রয়েছি। শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনে থাকবো। মানুষ আমাকে অনেক ভালোবাসেন। আল্লাহর রহমতে আমি আবারো জয়ী হব।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য শাজাহান খান বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত ছিল নির্বাচন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে, কোনো দলীয় প্রতীক থাকবে না। সে অনুযায়ী যার যার মতে তারা প্রার্থী হয়েছেন। অন্যান্য জায়গারটা আমি বলতে পারবো না।
তিনি আরও বলেন, এবার মাদারীপুর সদর উপজেলায় মাত্র দুই জন প্রার্থী রয়েছেন। একজন আমার বড় ছেলে আসিবুর রহমান খান এবং অন্যজন আমার আপন চাচাতো ভাই শফিক খান। এখন প্রশ্ন হলো দলীয় সিদ্ধান্ত যদি এটা হয় যে, সন্তান বা স্বজন তাদের প্রত্যেকে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে হবে, তাহলে মাদারীপুরে একজন আমার সন্তান আর আরেকজন আমার স্বজন। তাহলে দুজনকেই তো প্রত্যাহার করতে হবে। দুই জনকে প্রত্যাহার করতে হলে একটি শূন্যতার সৃষ্টি হবে। সেক্ষেত্রে কী হবে এসম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। আমি মনে করি, গণতান্ত্রিক অধিকার সবার আছে, সেই বিষয়টি দলের পক্ষে থেকে বিবেচনায় নেওয়া হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
মাদারীপুর জেলা নির্বাচন অফিসার আহমদ আলী জানান, মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দুইজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তাদের কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেনি। দুই প্রার্থীর মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে বলে জানান তিনি।