নীলফামারীতে আয়শা সিদ্দিকা নামের এক সহকারী শিক্ষিকা বিবাহবিচ্ছেদের নাটক সাজিয়ে এক বিদ্যালয় থেকে অন্য বিদ্যালয়ে বদলি হয়েছেন। ওই শিক্ষিকাকে বদলিকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগদান না করিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।
সহকারী শিক্ষিকা আয়শা সিদ্দিকার বাবার বাড়ি নীলফামারী সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের খামাতপাড়ায়। বিয়ের পর থেকে তিনি স্বামীর সঙ্গে বসবাস করছেন পাশের পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের জামতলা গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে। সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন কচুকাটা ইউনিয়নের দক্ষিণ দোনদুরী কেরানীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সম্প্রতি তিনি স্বামীর বাড়ির পাশে অবস্থিত পঞ্চপুকুর জামতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলির জন্য আবেদন করেন। কয়েক দফা যাচাই-বাছাই শেষে অনুমোদন করা হয় তার আবেদনটি।
বিষয়টি একদমই স্বাভাবিক মনে হলেও বিপত্তি ঘটায় আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করা ডিভোর্স (তালাক) পেপার। যেখানে দেখা যায়, ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আয়শাকে ডিভোর্স দেন স্বামী আল-আমিন ইসলাম। মূলত বদলি হতে তৈরি করা হয়েছিল ওই জাল ডিভোর্স পেপার।
অভিযুক্তের শ্বশুরবাড়ির প্রতিবেশীরা জানান, আয়শা সিদ্দিকা এখনো স্বামী-সন্তান নিয়ে শ্বশুরবাড়িতেই থাকেন। স্বামীর সঙ্গে তার ডিভোর্সের কথা শুনে আশ্চর্য হন তারা। প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী আল-আমিন প্রতিদিন আয়শা সিদ্দিকাকে স্কুলে দিয়ে এবং নিয়ে আসেন।
আয়শা সিদ্দিকার বাবার বাড়ির প্রতিবেশীরাও বলেন, আয়েশা সিদ্দিকার ডিভোর্স হয়নি। স্বামী-স্ত্রী মিলে ঈদের পর বেড়াতে এসেছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে স্বামী আল-আমীন ও আয়শা সিদ্দিকার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কথা বলতে রাজি হননি।
দক্ষিণ দোনদরী কেরানীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহাদুজ্জামান বলেন, আয়শা সিদ্দিকা তার স্বামীর সঙ্গেই থাকেন। বদলির অনুমোদন দেওয়ার সময় ভালোভাবে দেখিনি। ওভাবেই অনুমোদন দিয়ে দিয়েছি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ.এম. শাহজাহান সিদ্দিক বলেন, আয়শা সিদ্দিকা স্বামী পরিত্যক্তার মিথ্যা সার্টিফিকেট দাখিল করে বদলির আদেশ প্রাপ্ত হয়েছেন মর্মে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি জানার পরপরই আমি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিয়েছি, তিনি যেন সরেজমিনে তদন্ত করেন। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেলে তার (আয়েশা সিদ্দিকা) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।