সারা বাংলা

কাপ্তাই হ্রদে ১৫ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকার রাজস্ব আদায়

দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদ কাপ্তাই হ্রদ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাঙামাটির মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্র গত ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত মোট ১৫ কোটি ৫৬ লক্ষ ৫৬ হাজার ৯১৭ টাকার রাজস্ব আদায় করেছে বিএফডিসি।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৯ মাসে বিএফডিসি রাঙামাটি কেন্দ্র সর্বোচ্চ ১৫ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছিল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে অবতরণ মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্রের অধীন চারটি উপকেন্দ্রে মৎস্য অবতরণ ও শুল্ক আদায় করা হয়।

কাপ্তাই হ্রদের রাঙামাটি সদর উপজেলায় ৪,৪৭৫.৬৮ টন মাছ আহরণের বিপরীতে ৯০২.৫৮ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। কাপ্তাই উপজেলার অবতরণ কেন্দ্রে ২,৩৭৭.৭৭ মেট্রিক টন মাছ আহরণ করা হয়। এতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৯১.৯২ লক্ষ টাকা। মহালছড়ি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ৪৯৫.৪৩ টন মাছ আহরণ করা হয়েছে। এতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১০০.৭৮ লক্ষ টাকা। মারিশ্যা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মৎস্য আহরণ হয়েছে ২৭৮.৮০ টন মাছ। এর বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬১.২৮ লক্ষ টাকা।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে কাপ্তাই হ্রদে চারটি মৎস্য অবতরণ উপকেন্দ্র থেকে সর্বমোট ৭,৬২৭.৬৯ টন মৎস্য আহরণ করা হয়েছে। এতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৫ কোটি ৫৬ লক্ষ ৫৬ হাজার ৯১৭ টাকা।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটি অফিস জানিয়েছে যে, বিভিন্ন উপকেন্দ্রসমূহে ২০২৩-২৪ অবতরণ মৌসুমে অবতরণকৃত মাছের প্রজাতিভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায় কাপ্তাই হ্রদে চাপিলা, কাচঁকি, কাজুরী, মইল্যা, বাতাসি, শোল, কই, বোয়াল মাছসমূহের অবতরণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও চিতল, তেলাপিয়া, কালো টেংরা, গুলশা, বড় আইড়, গজার, ছোট আইড়’র অবতরণ পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি রুই, কাতলা, মৃগেল, বাটা, কালিবাউস, পাবদা, বাইম মাছের উৎপাদন কিছুটা কমেছে। এসব কমে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে এবং অনুসন্ধানের ফলাফল অনুযায়ী এদের উৎপাদন বৃদ্ধির যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাম্প্রতিক সময়ে জাঁকজাল স্থাপনের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানে ২৬টি ইঞ্জিন বোট, ২৪টি কাঠের বোট, ২৬টি জাঁকজাল, ২টি কেচকি জাল ও ৮টি অক্সিজেন সিলিন্ডার জব্দ করা হয়েছে। কাপ্তাই হ্রদে মা মাছসহ অন্যান্য সকল মাছের জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণ, সুষ্ঠু প্রজনন, বিস্তার ও যথাযথ বিচরণের স্বার্থে জেলা প্রশাসন ও বিএফডিসি রাঙামাটি কেন্দ্রের যৌথ তৎপরতা আরও জোরদার করা হবে।

এ প্রসঙ্গে কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপনন কেন্দ্র রাঙামাটির ব্যবস্থাপক কমান্ডার আশরাফুল আলম ভূঁইয়া বলেন, শুল্ক আদায়ে আরও স্বচ্ছতা আনতে অভয়াশ্রমসমূহ চিহ্নিতকরণ ও বিভিন্ন মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিকল্পে প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে এবং সরকারের যথাযথ অনুমোদন পেলে দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। আমরা আশা করছি কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য ব্যবস্থাপনার উন্নতিকল্পে ইতোমধ্যে পদক্ষেপসমূহের ফলাফল অচিরেই দৃশ্যমান হবে।