গ্রীষ্মকাল। দেশজুড়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। দিনভর প্রখর রোদ এবং তীব্র গরমে জনজীবনে যেখানে বিপর্যয় নেমে এসেছে তখন পঞ্চগড়ে রাতের আবহাওয়ার চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত।
জেলায় দিনের চেয়ে রাতের তাপমাত্রা অনেক কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এমনকি রাতে শীতের আমেজের কারণে অনেকেই ফ্যান কিংবা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র বন্ধ রাখছেন। ব্যবহার করছেন কাঁথা-কম্বল।
দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। হিমালয়ের নিকটবর্তী এ জেলায় শীত মৌসুমে অধিক শীত অনুভূত হওয়ায় ‘শীতের জেলা’ হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এই তীব্র গরমে রাতে এমন শীতল আবহাওয়া অনেকের জন্যই নতুন অভিজ্ঞতা।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, মৌসুমের শুরু থেকেই দিনে তীব্র গরম হলেও সন্ধ্যার পর তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়ায় মৃদু শীতল হাওয়া বিরাজ করছে পঞ্চগড়ে। কিছুদিন ধরে জেলার দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে ১৬-২২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে ৩৩-৩৮ ডিগ্রি। দিনের বেলা এখানে বাতাসের আর্দ্রতা ২১-৬০ শতাংশের মধ্যে থাকে, ফলে কখনও হালকা আবার কখনও বেশি গরম অনুভূত হয়।
এদিকে, সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে উত্তরের হিমশীতল বাতাসের প্রভাবে জনমনে কিছুটা স্বস্তি বিরাজ করে। রাতভর থাকে শীতল আবহাওয়া। এতে স্বস্তির শ্বাস ফেলেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, অনেক সময় রাতের বেলা মনে হয় যেন শীত মৌসুম চলছে। ঘুমাতে গেলে গায়ে জড়াতে হয় গরম কাপড়। ফ্যান চালানো হয় খুব কম সময়ের জন্য। কাঁথা-কম্বল তো লাগবেই।
সাইদুজ্জামান রেজা নামে এক সংবাদকর্মী বলেন, দিনে গরমে ভোগান্তি হলেও রাতের পরিবেশ স্বস্তিদায়ক। ঠান্ডার কারণে রাতে মোটরসাইকেল চালাতেও বেগ পেতে হয়।
পরিবেশকর্মী মাহমুদুল ইসলাম মামুন বলেন, হিমালয়ের নিকটবর্তী এ জেলায় জলাধার এবং সবুজের আচ্ছাদন বেশি। সবুজায়ন থাকায় তাপপ্রবাহের মধ্যেও কিছুটা স্বস্তিতে আছি। স্বস্তিদায়ক পরিবেশ ঠিক রাখতে বৃক্ষ নিধন কমাতে হবে এবং রোপণ বাড়াতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক রোকনুজ্জামান বলেন, ভৌগোলিক অবস্থার কারণে দিনের বেলা প্রখর রৌদ ও গরম থাকলেও রাতে কিছুটা শীতল আবহাওয়া বিরাজ করছে পঞ্চগড়ে। হিমালয় পর্বতসহ অন্যান্য পাহাড় কাছাকাছি হওয়ায় রাতে হিম বাতাস বয়ে যায়। এ কারণেই রাত এবং দিনের এমন বিপরীত চিত্র।