অল্পক্ষণেই তাড়াহুড়ো করে ছুটলেন অফিসে। পরের দৃশ্যপট আরও কঠিন। প্রচণ্ড দাবদাহ, অফিসের ভেতরে এ মাত্রা আরও বেশি। এর মধ্যেই অনেকের সঙ্গে সুইংয়ে কাজ করছেন সুমি খাতুন।
দিন কেটে গিয়ে প্রায় সন্ধ্যা, বাসায় ফিরে ফের সংসারের কাজ শুরু। শ্রমজীবী মায়েদের গল্প সবখানে প্রায় একই রকম। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই তিন বছর আগে স্বামীকে নিয়ে সিরাজগঞ্জ থেকে গাজীপুরে এসেছেন। ইট পাথরের শহরে আয়ের মাপকাঠিতে ঠাঁই হয়েছে তাদের শিল্পনগরী গাজীপুরের তেলিচালার ছোট্ট শ্রমিক কলোনিতে। শতশত মানুষের চাপে যেখানে টিকে থাকাই এক জীবন যুদ্ধ। হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেও সেখানে মা স্বপ্ন বুনছেন আদরের সন্তানদের শিক্ষিত করার।
তিনি বলেন, ‘আব্বা আম্মা ছাড়া বড় হইছি মামুবাড়ি। আমার যা না অইছে মেয়াদের দিয়া তাই করমু। যত কষ্টই অইক মানুষের মতো মানুষ করমু।’
তার স্বামী মো. সেলিম হোসেনও একই কারখানায় চাকরি করেন। সেলিম বলেন, ‘দুজনে মিলে মাসে ৩০ হাজার টাকা বেতন পাই। এক রুমের ঘরে কোনো রকমে চলতাছি। সন্তানরা মায়েরে বেশি বিশ্বাস করে, সবকিছু শেয়ার করে। এ কারণেই ছেলেমেয়েদের সঙ্গে মায়ের সম্পর্ক বেশি।’
নিঃস্বার্থ খেটে যাওয়া এই মায়েরা পরিবারের কাজ সামলে কোথাও তারা দোকানি, কোথাও আবার সুই সুতার কারিগর। আর এসব কিছুই সন্তান আর সংসারের কল্যাণে। স্বার্থহীন ভালোবাসার যে প্রতীক, সেই মায়েরা আজীবন থাকুক শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায়; বিশ্ব মা দিবসে এমনটাই প্রত্যাশা।