ঈদ শেষ হয়েছে অনেকদিন আগে। কিন্তু, এবারের ঈদ ছিল সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি ‘এমভি আবদুল্লাহ’ জাহাজের নাবিক ও তাদের পরিবারের জন্য বিষাদময়। স্বামী জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরে আসায় এবার জান্নাতুল ফেরদৌসের পরিবারে ঈদ এসেছে মঙ্গলবার (১৪ মে)।
আরও পড়ুন: আজ ঘরে ফিরবেন এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক
সোমালিয়ান জলদস্যুদের কাছ থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’ নাবিক জিএস নুরুদ্দিন স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস। আজ সকাল থেকেই স্বামীর অপেক্ষায় ছিলেন জান্নাতুল। বিকেলে বন্দর জেটিতে কথা হয় তার সঙ্গে। নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে জান্নাতুল বলেন, ‘আজ আমাদের আনন্দের দিন। ঈদের দিন। আজ অনেকদিন পর স্বামীর সঙ্গে দেখা হবে। তিনি দস্যুদের হাতে বন্দি থাকাকালীন আমরা অনেক উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিলাম।’
স্বামীকে ফোন করছেন জান্নাতুল
গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপকূলে নোঙর করে এমভি আবদুল্লাহ। মঙ্গলবার বিকেল ৩টা ৪৩ মিনিটে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের ২৩ নাবিক চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে এসে পৌঁছান ‘এমভি জাহানমনি’ নামের অপর একটি জাহাজের মাধ্যমে।
আরও পড়ুন: এমভি আব্দুল্লাহ কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে
এর আগে, আজ সকালে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের মালিক প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম জানান, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের দায়িত্ব নিতে ইতোমধ্যে নতুন টিম জাহাজে পৌঁছেছে। জলদস্যুদের কাছ থেকে মুক্ত ২৩ নাবিক নতুন নাবিক টিমের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে আজ বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে ফিরবেন। এমভি আবদুল্লাহ থেকে একটি লাইটার জাহাজের মাধ্যমে তাদের তীরে ফিরিয়ে আনা হবে। এর পর বন্দর এবং কেএসআরএম কর্তৃপক্ষের কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে তারা সবাই স্বজনদের কাছে ফিরে যাবেন।
কেএসআরএম সূত্র জানায়, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের নাবিকদের তীরে ফিরিয়ে আনতে এরইমধ্যে একই কোম্পানির মালিকানাধীন অপর একটি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর কাছে পৌঁছেঁছে। বিকেল ৩টা নাগাদ নাবিকরা চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিকেল কুতুবদিয়ায় পৌঁছাবে এমভি আবদুল্লাহ
এদিকে, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে বর্তমানে ৫৬ হাজার টন চুনাপাথর রয়েছে। এগুলো লাইটার জাহাজের মাধ্যমে খালাস করা হবে।
মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে দুবাই যাওয়ার পথে গত ১২ মার্চ সোমালিয়ার দস্যুরা ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ জিম্মি করে। ১৪ এপ্রিল ভোররাতে জাহাজটি জলদস্যু মুক্ত হয়।