সারা বাংলা

সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালের লিফট নষ্ট, দুর্ভোগ

গত দুই দিন হলো নষ্ট হয়েছে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের লিফট। ফলে অসহনীয় পর্যায়ের দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। গুরুত্বর অনেক রোগীকে স্ট্রেচারে করে সিঁড়ির ওপর দিয়ে নির্ধারিত কেবিনে বা ওয়ার্ডে নিয়ে যেতে দেখা গেছে, হাসপাতালের কর্মচারীদের। 

মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে আসা অসুস্থ রোগীরা পায়ে হেঁটে বহুতল ভবনে উঠতে কষ্ট পোহাচ্ছেন। পাশাপাশি ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য আনতে হাসপাতালের বিভিন্ন তলা থেকে বারবার নিচে যাওয়া আসা করতে থাকা রোগীর স্বজনদের ভোগান্তি ছিল চোখে পড়ার মতো।  

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের ছয় তলা ভবন বর্ধিত করণ কাজের জন্য একটি লিফট অনেকদিন বন্ধ আছে। গতকাল সোমবার (১৩ মে) সকালের দিকে নষ্ট হয়ে যায় চালু থাকা লিফটটি। একই সঙ্গে হাসপাতালের দুটি লিফটই বন্ধ থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা। অসুস্থ রোগীকে নিয়ে সিঁড়ি বেয়েই হাসপাতালের কেবিন বা ওয়ার্ডে যেতে হচ্ছে স্বজনদের। সেই ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিতে হচ্ছে অন্যদের। অনেক রোগী হাসপাতালে তার জন্য নির্ধারিত ফ্লোরে পৌঁছানোর আগেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। যদিও পুরাতন ভবনের র‍্যাম সিড়ি দিয়ে রোগীদের তিন তলা পর্যন্ত স্ট্রেচারে ঠেলে বা টেনে তোলা গেলেও ৪ তলা বা ৫ তলা পর্যন্ত উঠতে হচ্ছে সিড়ি দিয়ে। 

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আশা পৌর এলাকার সয়াধানগড়া মহল্লার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পায়ের ব্যথার জন্য দু’দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছি। লিফট চলছে না। কষ্ট করে সিঁড়ি দিয়ে নামতে ও উঠতে হচ্ছে। একবার তো আমি নিজেই খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। লিফট বন্ধ থাকায় সবারই অসহনীয় কষ্ট হচ্ছে। 

উল্লাপাড়ার পঞ্চক্রোশী গ্রামের রথীন্দ্র নাথ বিশ্বাস (৬০) বলেন, এক সপ্তাহ ধরে সার্জারি বিভাগে ভর্তি রয়েছি। আজ দুপুরে ওটিতে ড্রেসিং করার জন্য গিয়ে ছিলাম। এই অসুস্থ শরীর নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে হাসপাতালের ওপরের ফ্লোরে উঠতে খুব কষ্ট হয়েছে। একটু সময় দাঁড়িয়ে বিশ্রাম নিয়ে তারপর আবারও ওপরে উঠতে হয়েছে। 

সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের সারটিয়া গ্রামের আল-আমীন বলেন, লিফট বন্ধ থাকায় সিঁড়ি দিয়েই ওঠানামা করতে হচ্ছে। শ্বাসকষ্ট রয়েছে আমার। নির্ধারিত ওয়ার্ডে যেতে হাপিয়ে যাচ্ছি। এখন অক্সিজেন দিতে হবে। 

হাসপাতালের লিফট অপারেটর সেলিম রেজা বলেন, গত রোববার রাত থেকেই লিফটের বাটন ঠিকমতো কাজ করছিল না। এটা একটা বড় সমস্যা। যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। লিফট কাজ না করায় বন্ধ করে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। 

সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক রতন কুমার রায় বলেন, হাসপাতালের ষষ্ঠ তলা বর্ধিত করণ কাজের জন্য একটি লিফট বন্ধ আছে। আরেকটি লিফট নষ্ট হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে গণপূর্ত বিভাগকে জানিয়েছি। তারা সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছেন। 

সিরাজগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, হাসপাতালের লিফট নষ্ট হয়েছে। দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই মালামাল নিয়ে ঢাকা থেকে লোকজন রওনা হয়েছেন। যেহেতু সব সরঞ্জাম ও টেকনিশিয়ান লোকালি পাওয়া যায় না, তাই সাপ্লাইয়ারের কাছ থেকে মাল ও টেকনিশিয়ান নিয়ে এসে কাজ করতে হবে।