হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার উলুকান্দি গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মো. আব্দুল মোতালিব বেনুর মেধাবী মেয়ে নাজমা আক্তার বৃষ্টি ব্যাংকার হতে আগ্রহী।
সে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় উপজেলার উবাহাটা আজিজিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসা থেকে অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তার এমন ফলাফলে গ্রামবাসী আনন্দিত।
মেধাবী শিক্ষার্থী নাজমা আক্তার বৃষ্টি বলেন, গ্রামের উলুকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণিতে পড়া শেষে উবাহাটা আজিজিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাই। আমার বাবা কৃষি কাজের সঙ্গে নিয়োজিত। বাবার ইচ্ছে আমি পড়াশোনা করে যেন ব্যাংকার হই। এ লক্ষ্য নিয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছি। মাদ্রাসার ক্লাস শেষে বাড়ি এসে পড়ালেখা করেছি। প্রাইভেট পড়তে হয়নি।
বৃষ্টি আরও বলেন, বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে দুই কিলোমিটার অতিক্রম করে মাদ্রাসায় গিয়েছি। কঠোর পরিশ্রম করেছি বলেই ভালো ফলাফল করতে পেরেছি। আমি উচ্চ শিক্ষা নিয়ে বহুদূর এগিয়ে যেতে সবার দোয়া চাই।
বৃষ্টির বাবা কৃষক মো. আব্দুল মোতালিব বেনু বলেন, জমিতে চাষাবাদ করে উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে পরিবার পরিচালনা করতে হচ্ছে। মেয়েদের পড়ালেখার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও থেমে নেই। কষ্ট করে হলেও তাদের লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করে দেই। বৃষ্টির ভালো ফলাফলে কষ্টের কথা ভুলে গেছি।
বৃষ্টির মা মোছা. লুৎফা আক্তার বলেন, কষ্টের পর সুখ আসে। এজন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। বৃষ্টি মাদ্রাসা থেকে এসে খাবার খেয়ে কিছু সময় বিশ্রাম নিয়ে পড়াশোনায় ব্যস্ত হয়ে যেত। নিজের ইচ্ছানুযায়ী পড়াশোনা করে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ভালো ফলাফল করেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আয়েশা আক্তার বলেন, নিয়মিত স্কুলে যেতে হবে। করতে হবে ক্লাস। পড়াশোনায় মনোযোগী হলে ভালো ফলাফল সম্ভব। এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে তার প্রমাণ দেখালো কৃষক মো. আব্দুল মোতালিব বেনুর সন্তান নাজমা আক্তার বৃষ্টি।
তিনি আরও বলেন, শিশুদেরকে স্কুলমুখী করতে উপজেলা প্রশাসন নানাভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এরফলে সফলতা এসেছে। ক্রমান্বয়ে ঝরে পড়া শিশুরা লেখাপড়ায় আগ্রহী হয়ে উঠছে।