সারা বাংলা

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে হাতিয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে টানা বৃষ্টি ও জোয়ারে হাতিয়ার উপকূলীয় এলাকায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সোমবার (২৭ মে) বেলা ৩টা পর্যন্ত উপকূল জুড়ে বৃষ্টির সঙ্গে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বইতে দেখা গেছে।

হাতিয়া উপজেলা সূত্রে জানা গেছে, রেমালের আঘাতে ও জলোচ্ছ্বাসে চানন্দী ইউনিয়নের থানার হাটসহ নদী তীরবর্তী এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বসতবাড়ি, আসবাবপত্র জোয়ারে ভেসে গেছে। স্বেচ্ছাসেবীরা সহযোগিতা করছে। গতকাল রাতভরও চলেছে ঝড়ের তাণ্ডব।

স্থানীয় বাসিন্দা তছলিম বলেন, জোয়ারে ও বাতাসে অধিকাংশ কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হওয়ায় হাতিয়া জুড়ে হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া হাতিয়ার চরাঞ্চলগুলোর বিস্তীর্ণ এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে সমগ্র হাতিয়ার প্রায় লক্ষাধিক বাসিন্দা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এদিকে হাতিয়ার উপকূলীয় এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মানুষজন।

উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানান, রাতে মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে ছিল। সেখানে যা খাবার ছিল তা রাতেই শেষ। সকালে নিজের ভিটেমাটি দেখতে ও খাবারের জন্য সবাই নিজ বাড়িতে যান। গিয়ে দেখেন অনেকের বাড়িঘর ভেসে গেছে। অনেকেই পানিবন্দি হয়ে আছেন।

নিঝুমদ্বীপের বাসিন্দা কেফায়েত বলেন, ঘরে বিদ্যুৎ নেই। কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। এত বন্যা দেখেছি, কিন্তু এমন ভয়াবহ অবস্থা দেখি নাই।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুভাশীষ চাকমা বলেন, সোমবার সকাল থেকে নিঝুমদ্বীপসহ অন্যান্য এলাকার পানি কমতে শুরু করলেও তীব্র বাতাস ও বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় বাড়িঘর, গাছপালা, ফসলাদি, পুকুর, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্যাদি সংগ্রহ করা যায়নি। হাতিয়ার সঙ্গে বাইরের সব নৌ-যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে এবং গতকাল থেকে হাতিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ। আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি।

নোয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল দুর্বল হয়ে পড়েছে। এটি বৃষ্টিপাতের পর স্থল নিম্নচাপে পরিণত হবে।