সারা বাংলা

তুষার ঝড়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে ফিরেছি: বাবর আলী

এভারেস্ট জয় করে ফিরে আসার সময় তুষার ঝড়ের কবলে পড়েছিলেন চট্টগ্রামের সন্তান বাবর আলী। গতকাল রাতে চট্টগ্রামে নিজ গ্রামে ফেরার পর আজ বুধবার  (২৯ মে) গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। চট্টগ্রামের আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে নিজের এভারেস্ট জয়ের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন তিনি। বাবর আলী এভারেস্টের পাশাপাশি বাংলাদেশের হয়ে প্রথম লোৎসে পর্বত জয়ী পর্বতারোহী। 

বাবর আলী বলেন, ‌এভারেস্ট ও লোৎসে পর্বত জয় করে ফিরে আসার পথে বিপদের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। আসার সময় আহত এক পর্বতারোহীর জন্য নেমে আসার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। এ সময় সৃষ্টি হয় মানবজট। প্রায় দেড়ঘণ্টা সেখানে আটকে থাকতে হয়েছিল। যা ছিলো বিপজ্জনক। নেমে আসার এক পর্যায়ে শুরু হয়েছিলো ভয়াবহ তুষার ঝড়। এই ঝড়ের সঙ্গে প্রায় আড়াই ঘণ্টা লড়াই করতে হয়েছে। তুষার ঝড় মোকাবিলা করে বেঁচে ফেরাটা ছিলো সৌভাগ্যজনক। 

নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ১৯২৪ সালে জর্জ মেলোরি মহাকাব্যিক অভিযানে প্রথম এভারেস্ট জয় করেন। তার ১০০ বছর পর আমি এভারেস্ট আরোহণ করতে পেরেছি। গত ১০ এপ্রিল এভারেস্ট জয়ের লক্ষ্যে আমি বেস ক্যাম্পে পৌঁছাই। কুমু আইসফলের (বরফের প্রপাত) রাস্তা তখনো ওপেন হয়নি। এই সড়কটি অ্যালুমিনিয়াম সিঁড়ি দিয়ে পার হতে হয়। প্রচুর দুর্ঘটনা ঘটে। একজনকে হেলিকপ্টারে উদ্ধার করতে হয়েছিল। অনেক চ্যালেঞ্জ এবং ঝুঁকি মোকাবিলা করেই আমাকে সামনে যেতে হয়েছে। 

বাবর জানান, ক্যাম্প ৪ এবং এর ওপরে পর্বাতারোহীরা অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করলেও চেষ্টা তিনি করেছেন অভিযানে যতটা সম্ভব কম কৃত্রিম অক্সিজেন নিতে। এভারেস্ট এবং লোৎসে পর্বতমালা জয়ে নেপালের গাইড বাইরে তামাং তাকে পূর্ণ সহায়তা করেছেন বলেও জানান তিনি। 

বাবর বলেন, এভারেস্টের উচ্চতা বেশি হলেও লোৎসে আরোহণ তুলনামূলক কঠিন। দুটি পর্বতমালা জয় করে সুস্থ শরীরে ফিরে এসেছি এটা আমাকে আনন্দ দিয়েছে। এই অভিযানে আমার শরীরের ওজন ৪ কেজি কমেছে।   

এভারেস্ট জয়ের ভয়ানক অভিজ্ঞতার তুলে ধরে বাবর বলেন, এভারেস্টে অনেক মরদেহ দেখেছি। এর মধ্যে অনেকের ইকুইপমেন্ট ছিল নতুন, তারা মারা গেছেন বেশিদিন হয়নি। এভারেস্ট সামিট করার ক্ষেত্রে আবহাওয়া বড় ফ্যাক্টর। বাংলাদেশের একজন আবহাওয়াবিদ আমাকে দারুণ সহযোগিতা করেছেন।  

সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এই পর্বতারোহী বলেন, এভারেস্ট জয়ের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ তহবিল বা স্পন্সর পাওয়া। আমার এভারেস্ট জয়ে যারা সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।