নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার বিশকাকুনী ইউনিয়নের কাছিয়াকান্দা গ্রামের একটি কাঁচা সড়কের পাশ থেকে ৩০ বছর বয়সী নারীর মরদেহ উদ্ধার হয়। এসময় সেখান থেকে অচেতন অবস্থায় জীবিত উদ্ধার হয়েছে দুই বছরের শিশু। বর্তমানে শিশুটি ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শিশুটি গুরুতর কোনো আঘাত পায়নি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। তবে এখনো তার জ্ঞান ফেরেনি।
বুধবার (২৯ মে) বিকেল সাড়ে সাড়ে ৫টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নতুন বিল্ডিংয়ের তিন তলা ভবনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে শিশুটিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেখা গেছে। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডা. জাকিউল ইসলাম বলেন, ওই শিশুর বিষয়ে সার্বিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। শিশুর মাথার সিটিস্ক্যান করানো হয়েছে। সিটিস্ক্যান রিপোর্টে শিশুর মস্তিস্কে রক্ষক্ষরণের ঘটনা ঘটেনি। আপাত দৃষ্টিতে তার কোনো অস্ত্রপ্রচারের প্রয়োজন নেই।
শিশুর জ্ঞান কেন ফিরছে না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. শামীউল আলম সিদ্দিকী শামীমের তত্ত্বাবধানে শিশুর চিকিৎসা চলছে। তিনি আরও বিস্তারিত বলতে পারবেন।
হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. শামীউল আলম সিদ্দিকী শামীম বলেন, আঘাতে অনেক সময় মস্তিস্ক নড়ে যায়। যে কারণে অনেক সময় জ্ঞান ফিরতে সময় লেগে যায়। এই শিশুর জ্ঞান ফিরতে কতো সময় লাগবে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
এর আগে, আজ বুধবার ভোরে নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার বিশকাকুনী ইউনিয়নের কাছিয়াকান্দা গ্রামে আনুমানিক ২ বছরের জীবিত শিশুসহ নাম না জানা নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ভোরে ওই উপজেলার কাছিয়াকান্দা গ্রামের এক ব্যক্তি ফজরের নামাজ পড়ে মাদরাসার পাশে তার মায়ের কবর জিয়ারত করতে যান। এসময় এক শিশু ও নারীকে কাঁচা রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখে তিনি পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে এবং শিশুটিকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়।
পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল ইসলাম বলেন, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে গ্রামবাসী এক নারী ও শিশুকে কাঁচা রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জীবিত শিশু ও নাম না জানা নারীর মরদেহ উদ্ধার করে। শিশুটিকে তাৎক্ষণিক ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মরদেহ সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শিশুটি বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালে শিশুটি কাছিয়াকান্দা গ্রামের ইউপি সদস্য রোস্তম আলী ও সুজাত মিয়া দেখাশোনা করছেন। এই ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
শিশুর সঙ্গে থাকা সুজাত মিয়া বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে নারীর মরদেহ ও শিশু পাওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। কিছুক্ষণ পরে পুলিশ আসে। পুলিশ মরদেহ নড়াচড়া করে। তখন মারা যাওয়া নারীর মাথার পেছনে শক্ত কিছু দিয়ে আঘাত করার চিন্হ দেখা যায়।