ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে নষ্ট হয়েছে বন্যপ্রাণী ও জেলে-বাওয়ালিদের খাওয়ার জন্য মিঠাপানির ৮৮টি পুকুরের পানি। এতে বনের অভ্যন্তরে সুপেয় পানির তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বন বিভাগ জানিয়েছে, সংকট নিরসনে কাজ শুরু করেছেন তারা।
বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে বনের ৮৮টি পুকুরের পানি লবণাক্ত হয়েছে। এতে খাবার পানির সংকটে পড়েছে বানর, হরিণ, বাঘসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী। ইতিমধ্যে বনের এসব পুকুর থেকে লবণাক্ত পানি অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে। যদি শিগগিরই বৃষ্টি না হয়, তাহলে বাহির থেকে মিঠাপানি এনে পুকুরগুলোতে মজুত করা হবে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বনের ভেতর ৭-১০ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়। এতে মিঠাপানির পুকুরগুলো তলিয়ে নোনা পানি ঢুকে পড়ে। এখনও বনের মধ্যে অনেক আহত ও নিহত প্রাণীর মৃতদেহ পাওয়া যাচ্ছে। যেসব বন্যপ্রাণী আহত হয়েছে আমরা সেগুলো পর্যবেক্ষণে রাখছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে বন কর্মীরা সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থান পর্যবেক্ষণ করছেন।
সুন্দরবন খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে উচ্চ জোয়ারে সুন্দরবনের সব নদী-খাল উপচে বনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ সময় বনের ভেতরে প্রায় ৮৮টি মিঠাপানির পুকুর প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টি হলে যাতে এসব পুকুরে মিঠাপানি জমা হয় সেজন্য মেশিন বসিয়ে লবণাক্ত পানি অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল উপকূল অতিক্রম করার পর থেকে এখন পর্যন্ত বনের বিভিন্ন স্থান থেকে হরিণ ও শুকরসহ ১৩১টি বন্যপ্রাণীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া, জীবিত ১৮টি হরিণ ও একটি অজগর উদ্ধার করা হয়েছে।