সারা বাংলা

খুলনায় বৃক্ষ নিধন: স্থানীয়দের তোপের মুখে ঠিকাদার ও উপপরিচালক

খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার ব্রহ্মগাতি গ্রামে খাল খননের জন্য নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের ঘটনায় সরেজমিন তদন্তে এসে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়েন ঠিকাদার ও প্রকল্পের উপপরিচালক। রোববার (২ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় গাছ কাটা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সাসটেইনেবল পোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক সরোজ কুমার ও ঠিকাদার মোহাম্মদ আরিফ রহমান। এ সময় এলাকাবাসী গাছ কাটার জন্য ক্ষতি পূরণ দাবি করেন। 

উপজেলার ব্রহ্মগাতি গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নাককাটি খাল খননের জন্য উপজেলা মৎস্য অফিসের তত্ত্বাবধায়নে ‘শরীফ এন্ড ফিলামেন্ট’ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এ বছরের ৪ এপ্রিল থেকে ১০ অক্টোবরের মধ্যে কাজ সমাপ্তির কথা রয়েছে। খালের দৈর্ঘ ৪ দশমিক ৪ কিলোমিটার। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরুর আগে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনজুরুল ইসলামের মাধ্যমে এলাকায় মাইকিং করে খালের পাড়ের ব্যক্তি মালিকানার জমির গাছ, ঘরবাড়ি ও মৎস্য ঘের সরিয়ে ফেলতে বলেন। এ জন্য তিন দিনের সময় বেধে দেওয়া হয়। 

এলাকাবাসী জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভেকু মেশিন দিয়ে খালের পাড়ের প্রায় ৫ হাজার গাছ কেটে ফেলেছে। মৎস্য ঘেরের বেড়িবাঁধ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ কাজে স্থানীয়রা বাধা দিলে তাদের ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তারা।

নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের ঘটনায় ক্ষতিপূরণের দাবিতে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।

সাসটেইনেবল পোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের উপপরিচালক সরোজ কুমার এলাকাবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা এলাকাবাসীর ক্ষতি করে কাজ করতে চাই না। কোনো সুযোগও নেই গাছ কাটার। এলাকাবাসীর সঙ্গে নিয়ে যদি কোনো কাজ করা যায়, এটাই মঙ্গল।’ 

তিনি বলেন, গাছ কাটার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনজুরুল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। 

ঠিকাদার কর্তৃক হুমকি ও এলাকাবাসীর ক্ষতিপূরণের দাবিতে শনিবার (১ জুন) রাতে দিঘলিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ইবনুল হাসান মিনার। 

এ বিষয়ে দিঘলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলাম বলেন, ব্যাক্তি মালিকানাধীন গাছ ও ঘরবাড়ির ক্ষতি করে খাল খনন করা যাবে না। আর যে গাছপালার ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ দেওয়া লাগবে। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী ও ঠিকাদারের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মঞ্জুরুল ইসলাম মাইকিং করার কথা স্বীকার করে বলেন, খালের উভয় পাড় থেকে গাছগুলো সরিয়ে ফেলার অনুরোধ করা হয়।