সারা বাংলা

সৌরভকে টুকরো করার হুমকি দিয়েছিল চাচা, অভিযোগ বাবার

চার টুকরো করে খুন করা ওমর ফারুক সৌরভের সঙ্গে পাঁচ বছরের প্রেমের সর্ম্পক ছিল তার আপন চাচাতো বোন ইসরাত জাহান ইভার। এই প্রেমকে পরিণয় দিতে গত ১২ মে ঢাকা গিয়ে গোপনে ইভাকে বিয়ে করেছিলেন সৌরভ। কিন্তু, তাদের এই সর্ম্পক মেনে নেননি চাচা ইলিয়াস আলী আকন্দ। ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি পূর্বপরিকল্পিতভাবে ডেকে এনে খুন করেছেন সৌরভকে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের বাবা মো. ইউসুফ আলী।  

সোমবার (৩ জুন) বিকেলে কান্না জড়িত কণ্ঠে সন্তান খুন হওয়ার কারণ জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত ডাক বিভাগের কর্মচারী ইউসুফ আলী।  এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে নাম না জানা ব্যক্তিদের আসামি করে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা করেছেন।

আরও পড়ুন: ৪ খণ্ডে উদ্ধার হওয়া যুবক প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী

ইউসুফ আলী বলেন, “সৌরভ ও ইভার প্রেমের বিয়ের কয়েকদিন পর ইলিয়াস আমাকে ফোন করে হুমকি দিয়েছিল। সে বলেছিল, ‘তোর ছেলেকে কেটে টুকরো টুকরো করে খুন করব। এটা না করে আমি পানিও খাব না।’ তখন আমি তার কথা বিশ্বাস করিনি। মনে করেছিলাম, এটা তার রাগ-ক্ষোভের কথা। কিন্তু, এখন তার কথাই সত্য হয়েছে। আমার ছেলেকে টুকরো টুকরো করে খুন করা হয়েছে। এই পৃথিবীতে এখন আমার বেঁচে থেকে লাভ কী। আমি ছেলের খুনের বিচার চাই।”

নিহত সৌরভের মা মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘ইলিয়াস তার মেয়ে ইভাকে কানাডা পাঠিয়ে দেওয়ার পর আমার ছেলেকে ডেকে এনে হত্যা করেছে। আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

আরও পড়ুন: লাগেজের ভেতরে দেহ, বাইরে পড়ে ছিলো মাথা

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইগবাজ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘ইলিয়াস নিহত সৌরভকে টুকরো টুকরো করে খুন করার হুমকি দিয়েছিলেন। এই হুমকির অডিও কল রেকর্ড আমি শুনেছি। রেকর্ডটি নিহত সৌরভের মায়ের কাছে সংরক্ষিত আছে।’

এদিকে, হত্যাকাণ্ডের পর ইলিয়াস আলী আকন্দকে খুঁজছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক। তার মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ। তাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা গোয়েন্দা ও থানা পুলিশের কর্মকর্তারা।

এবিষয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলমান আছে। বিস্তারিত খুব দ্রুত জানানো হবে।

প্রসঙ্গত, গতকাল রোববার (২ জুন) সকালে ময়মনসিংহ সদর ও মুক্তাগাছা উপজেলার সীমান্তবর্তী মনতলা ব্রিজের নিচে সুতিয়া নদী থেকে নাম না জানা যুবকের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কালো রঙের একটি ট্রলি ব্যাগ থেকে মরদেহের শরীরের তিন খণ্ড এবং পাশেই একটি বাজারের ব্যাগে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় খণ্ডিত মাথা উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর প্রযুক্তির সহায়তায় নিহতের পরিচয় শনাক্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আনোয়ার হোসেন।