নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতায় পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী তানভীর ইসলামের ৫ সমর্থককে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে পরাজিত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামালের বিরুদ্ধে। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের আসবাবপত্র ও ৩টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৪ জুন) দুপুরে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম। এর আগে সোমবার (০৩ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে আটঘরিয়া বাজার সংলগ্ন ইশারত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- উপজেলার চাঁদভা ইউনিয়নের কুঠিপাড়া এলাকার জিয়াউর রহমান (৪২), পৌর এলাকার বুলবুল ফকির (৪০), রনি হোসেন (২৬), জাহিদ হোসেন (৩০) ও ভোলা (২২)। এদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় জিয়াকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকীদের আটঘরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে থেকে সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নেতাকর্মীরা বাড়ি ফিরছিলেন। পথে ইশারত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছালে আগে থেকেই সেখানে থাকা প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যান পদে পরাজিত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামালের সমর্থক জুয়েল, শাহা আলম ও প্রিন্সসহ অন্যান্যরা অতর্কিত কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারিভাবে কুপিয়ে পাঁচজনকে আহত করে। পরে তারা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ঢুকে আসবাবপত্র, টেলিভিশন, বঙ্গবন্ধুর ছবি ও তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এ সময় আশপাশের লোকজন আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এদিকে এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ‘নির্বাচন পরবর্তীতে আটঘরিয়ার পরিস্থিতি শান্তই ছিল। কিন্তু গতকাল হঠাৎ করে এমন একটি ঘটনার ঘটলো। এ ব্যাপারে আমাদের জিরো টলারেন্স, দোষীদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশা করি খুব শিগগিরই দায়ীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
এ ব্যাপারে আটঘরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র শহিদুল ইসলাম রতন বলেন, ‘নির্বাচনের পর থেকেই বিজয়ী চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের ওপর হামলার পরিকল্পনা ছিল। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই চিহ্নিত সন্ত্রাসী জুয়েলের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের আসবাবপত্র, টেলিভিশন ও ৩টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।’
এ ঘটনায় পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামালের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে কলটি রিসিভ করেন আফজাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি। তিনি নিজেকে কামালের পিএস পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘নির্বাচনের সময় তারা (অভিযুক্তরা) মার খেয়েছিল, কালকে তারা মার দিয়েছে। নির্বাচনের দিন যে মারামারি হয়েছিল কালকে তার প্রতিশোধ নেওয়া হয়েছে।’