নাম ‘কুয়াকাটার কালো মানিক’। ওজন ২৭ মণ। প্রায় তিন বছর যত্নের সঙ্গে লালন-পালন করে আসন্ন কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য ষাঁড়টিকে প্রস্তুত করেছেন গোলাম রাব্বানী নামের এক শিক্ষার্থী। এ কাজে তাকে সহায়তা করেছেন পরিবারের সদস্যরা। বিশাল দেহের কালো মানিককে দেখতে এখন আশপাশের এলাকার মানুষর ভিড় করছেন ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে।
পটুয়াখালীর লতাচাপলী ইউনিয়নের আজিমপুর গ্রামের বাসিন্দা নাসির মৃধা তিন বছর আগে ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টি ৯০ হাজার টাকায় কিনে আনেন। এরপর থেকেই ষাঁড়টির সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে রব্বানীর। লেখাপড়ার পাশাপাশি রাব্বানী ষাঁড়টিকে লালন-পালন করতে থাকেন। শান্ত স্বভাবের হওয়ায় শখের বসে রব্বানী তার প্রিয় এই প্রাণীটির নাম রাখেন কুয়াকাটার কালো মানিক।
মুসুল্লীয়াবাদ এ.কে মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পাস করা রব্বানী। ৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪ ফুট উচ্চতার কুয়াকাটার কালো মানিককে কোরবানির ঈদের হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন তিনি। ষাঁড়টির ওজন এখন ২৭ মণ। শুধুমাত্র খড়, ভুসি ও ভুট্টা খেতে দেওয়া হয় কুয়াকাটার কালো মানিককে। করা হয় প্রচুর যত্ন। এ কারণেই সবার কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে ষাঁড়টি বলে দাবি রাব্বানীর।
কোবরানির ঈদে বিক্রির জন্য রব্বানীর বাবা নাসির মৃধা কালো ও সাদা বর্ণের কালো মানিকের দাম হাঁকছেন ১০ লাখ টাকা। সঙ্গে একটি ১০ কেজির খাসিও ফ্রি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এর আগে এতো বড় ষাঁড় দেখেননি বলে জানান স্থানীয়রা।
প্রতিবেশী তানভীর মিয়া বলেন, গোলাম রাব্বানী পড়ালেখার পাশাপাশি এই ষাঁড়টি লালন-পালন করেছেন। ষাঁড়টির পেছনে অনেক শ্রম দিতে দেখেছি তাকে। আমরা প্রায়ই ষাঁড়টি দেখতে তাদের বাড়িতে যাই।
অপর প্রতিবেশী আলম মৃধা বলেন, এটি এই উপজেলার সবচেয়ে বেশি ওজনের ষাঁড়। এতো বড় ষাঁড় আমরা এর আগে কখনো দেখিনি। গোলাম রাব্বানীকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ সে এবার এসএসি পরীক্ষাতে ভালো রেজাল্ট করেছে। পাশাপাশি গরু পালনেও সফলতা পেয়েছে।
গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘তিন বছর আগে বাবা আমাকে এই ষাঁড়টি কিনে দেন। তিনি ষাঁড়টিকে লালন-পালন করতে বলেন। ওর নাম কুয়াকাটার কালো মানিক রেখেছি। শিশুর মতো ওকে লালন পালন করেনি। পড়ালেখার পাশাপাশি ষাঁড়টি পালন করে এতো বড় করতে পারায় আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। এখন বিক্রি করতে পারলেই হলো। ষাঁড়টিকে এতো বড় করতে পারবো সেটা কখনোই ভাবিনি।’
রাব্বানীর বাবা নাসির মৃধা বলেন, ‘এই ষাঁড়টি আমার ছোট ছেলে রাব্বানী লালন পালন করেছে। আমরা এখন এটার দাম চাচ্ছি ১০ লাখ টাকা। এই দামে বিক্রি করতে পারলে ১০ কেজির একটি খাসি ফ্রিতে দেবো।’
কলাপাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডা. জামাল হোসেন বলেন, কলাপাড়ায় কোরবানির চাহিদার চেয়েও প্রায় ২২ হাজার গরু-ছাগল প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে গোলাম রাব্বানীর ষাঁড়টি সবচেয়ে বড়। গোলাম রাব্বানীসহ উপজেলার সব পশু খামারিদের সকল ধরনের সহায়তা করা হয়েছে।