সারা বাংলা

সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে স্বস্তির ঈদযাত্রা

রাত পোহালেই ঈদুল আজহা। তাই শেষ সময়েও উত্তরাঞ্চলের মানুষ নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে। সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কে বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে ঘরমুখো মানুষের ভিড় দেখা গেছে।

রোববার (১৬ জুন) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলার মুলিবাড়ী, কড্ডার মোড়, নলঙ্গা, হাটিকুমরুল গোলচত্বর ও চান্দাইকোনা এলাকায় দেখা যায়, মহাসড়কসহ সব রুটে যানবাহনের চাপ অনেক কম। ধীরে ধীরে ফাঁকা হতে শুরু করেছে জেলার সব মহাসড়ক।

শনিবার (১৫ জুন) রাতভর বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে হাজার হাজার যানবাহনের ভিড় ছিল। টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাড়ে যানজট থাকার কারণে পশ্চিমপাড়ে গাড়ির চাপ বেড়ে যায়। রোববার সকালেও গাড়ির বেশ চাপ লক্ষ্য করা যায়। তবে দুপুরের পর থেকে যানবাহন কমতে শুরু করে।

বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ২২টি জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চলের মানুষের সড়ক যোগাযোগের অন্যতম রুট হয়ে ওঠেছে সিরাজগঞ্জের মহাসড়কগুলো। প্রতি বছরই এ রুটে গাড়ির সংখ্যা বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে যানজট, দুর্ঘটনা আর দুর্ভোগের রুটে পরিচিত হয় সিরাজগঞ্জের সড়কগুলো। বিশেষ করে ঈদযাত্রার সময়। তবে সড়ক উন্নয়নের ফলে গত ঈদুল ফিতর থেকে এ জেলার ১০৪ কিলোমিটার মহাসড়কের পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। অনেকটাই স্বাভাবিকভাবে যানবাহন চলাচল করে সড়ক দিয়ে। সেই ধারাবাহিকতা রয়েছে কোরবানির ঈদেও। এখনও বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সড়ক ও হাটিকুমরুল-চান্দাইকোনা মহাসড়কে তেমন সমস্যা হয়নি।

ট্রাকে করে বাড়ি ফিরছিলেন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার মজিবর রহমান। তিনি বলেন, ‘অনেক বছর ধরে এত সহজে এ সড়ক পার হতে পারিনি। এবার খুব ভালো লাগছে। তবে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গার দিকে সামান্য যানজট থাকায় কিছুটা সমস্যা হয়েছে।’

গাজীপুর থেকে বাসে কড্ডার মোড়ে এসে নামার পরে বেসরকারি চাকরিজীবী মোতালেব হোসেন বলেন, ‘এত সহজে বাড়ি আসতে পারব ভাবতেও পারিনি। সেতুর উপারে কিছু সময় লেগেছে। তবে সেতু পার হওয়ার পরে কোনো সমস্যা হয়নি।’

ট্রাক চালক সাব্বির হোসেন বলেন, ‘সিরাজগঞ্জে আর সেই দুর্ভোগ নেই। এক সময়ে গলার কাঁটা ছিল। এখন রাস্তাঘাট ভালো হওয়ায় যানজট নেই। স্বাভাবিক দিনের মতোই চলাচল করছি।’

বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, রাতে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাড়ে গাড়ির দীর্ঘ সারি ছিল। গাড়ির চাপ সামলাতে সেতুর ঢাকামুখী লেন বন্ধ করে দিয়ে উভয়লেনে উত্তরবঙ্গগামী গাড়ি ছাড়া হয়। সকাল থেকে গাড়ির চাপ কমে আসে।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল ওদুদ জানান, রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ব্যাপক গাড়ির চাপ ছিল। তবে কোথাও যানজট বা ধীরগতি ছিল না। দুপুরের পর থেকে মহাসড়কে চাপ কমতে শুরু করেছে।

সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) মো. জাফর উল্লাহ বলেন, দুপুরের পর থেকে ধীরে ধীরে ফাঁকা হতে শুরু করেছে জেলার সব রুট। স্বাভাবিক দিনের মতো গাড়ি চলাচল করছে। এরপর আর গাড়ির চাপ বাড়ার সম্ভাবনা নেই বলে। এবারের ঈদযাত্রা এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় এখন পর্যন্ত ভোগান্তি হয়নি। আর কোনো সমস্যা হবে না বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।