চট্টগ্রামের পটিয়া থানার হাইদগাঁও ইউনিয়নের কলেজ ছাত্রী রিমা আকতারের ‘শখের পুরুষ’ ছিলেন ব্যাংকার মিজানুর রহমান। দীর্ঘ প্রেমের সম্পর্কের পর উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে ঠিক হয় তাদের। প্রেমিক পরিবারের যৌতুক দাবির প্রতিবাদে মেহেদী অনুষ্ঠানের দিনই আত্মহত্যা করেন রিমা। এর আগে সুইসাইড নোটে তিনি লিখে যান, তার প্রেমিক মিজানকে যেন ছেড়ে দেওয়া না হয়। এ ঘটনায় রিমার পরিবার থানায় মামলা করেছে। গতকাল শনিবার (২৯ জুন) মামলাটি হয়। আসামি করা হয়েছে রিমার শখের পুরুষ ব্যাংকার মিজানুর রহমানকে।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসীম উদ্দিন রোববার (৩০ জুন) মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: বিয়ের আগেই যৌতুকের বলি রিমা
ওসি জসীম উদ্দিন বলেন, ‘যৌতুকের চাপে মেহেদী অনুষ্ঠানের দিন রিমা আকতার নামে তরুণীর আত্মহত্যার ঘটনায় পটিয়া থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় রিমার হবু স্বামীকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেছেন রিমার বাবা মনির হোসেন। পুলিশ মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। মামলায় উল্লেখিত আসামি ছাড়া ঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ সম্পৃক্ত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রিমা আকতার, পাশে তার লেখা চিরকুট
উল্লেখ্য, পটিয়া সরকারি কলেজের অনার্স পড়ুয়া রিমা আকতারের সাথে একই এলাকার মিজানুর রহমান মোরশেদের ৪ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। উভয় পরিবার সম্পর্ক মেনে নিয়ে গত শুক্রবার (২৮ জুন) তাদের বিয়ের দিন ঠিক করেন। বিয়ের আগ মুহূর্তে হবু শ্বশুর বাড়ি থেকে যৌতুকের চাপে অতিষ্ঠ হয়ে এবং যৌতুক দাবির প্রতিবাদ জানিয়ে মেহেদী অনুষ্ঠানের দিনই আত্মহত্যা করেন রিমা আকতার। সেসময় তিনি একটি সুইসাইড নোটে লিখে রেখে যান।
সুইসাইড নোটে রিমা লিখে গেছেন- ‘প্রিয় শখের পুরুষ, তুমি করো তোমার বিয়ে। অনেক ভালোবেসেছো এবং অতিরিক্ত যন্ত্রণাও দিয়েছো। আমি পারছি না এতো যন্ত্রণা নিতে। বাকি জীবনটা সুন্দর করে উপভোগ করতে পারলাম না, ভালো থেকো। আজকের দিনেও তোমার যন্ত্রণা আমি নিতে পারছি না। আমার পরিবারের কাছ থেকে যে যৌতুকের টাকা তোমাদের দিয়েছে সেগুলো শোধ করে দিও। তুমি আমাকে বাঁচতে দিলে না, আমি বাঁচতে পারতাম যদি আমি বেশি মান-সম্মানওয়ালা পরিবারে জন্মগ্রহণ না করতাম। সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিও। আর আমার পোস্টমর্টেম করে আমার সব যন্ত্রণা ধুয়ে মুছে আমাকে কবরে পাঠিয়ো।’
চিরকুটের শেষে রিমা আরও লিখে গেছেন- ‘আর আমার পরিবারকে বলছি, মোরশেদকে তোমরা ছাড়বে না। ওকে ওর প্রাপ্য শাস্তি তোমরা দিবা।’