সারা বাংলা

চোরাইপথে আসছে বিপুল অ্যান্ড্রয়েড ও ফিচার ফোন, গ্রেপ্তার ৪

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ৮০৮টি চোরাই অ্যান্ড্রয়েড ও ফিচার মোবাইল ফোনসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-৩। এ সময় তাদের ব্যবহৃত দুটি প্রাইভেট কার ও নগদ টাকা জব্দ করে র‍্যাব। 

এসব ফোন ভারতীয় কারখানায় তৈরিকৃত এবং চক্রটি কুমিল্লা সীমান্ত এলাকা দিয়ে গত দেড়মাসে এ ধরনের ৫টি বড় চালান ঢাকায় সরবরাহ করেছে বলে জানায় তারা।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আবু তাহের (২৬) এই চক্রের মূলহোতা। আবু তাহের মোবাইল ফোনের শো-রুমের বিক্রয়কর্মী থেকে হয়ে ওঠেন সংঘবদ্ধ চোরাকারবারি দলের নেতা। গ্রেপ্তারকৃত অন্য ৩ জন হলেন- মো. মেহেদী হাসান (২২), মো. রুবেল হোসেন (২৯) ও মো. নূর নবী (৩২)। 

রোববার (৩০ জুন) রাতে র‍্যাব-৩ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফয়জুল ইসলাম গণমাধ্যমে এ তথ্য জানান। এরআগে সোনারগাঁয়ে অভিযান চালিয়ে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে চোরাইপথে কুমিল্লা সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ভারতীয় কারখানায় তৈরি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ব্রান্ডের মোবাইল ফোন কুমিল্লা-ঢাকা রুট ব্যবহার করে রাজধানীতে নিয়ে আসে। সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার কারণে গ্রাহকের কাছে কমদামে বিক্রয় করা হয় ফলে বাজারে এ সকল মোবাইল ফোনের অনেক চাহিদা রয়েছে। এছাড়া এ সকল ফোনের আইএমইআই নম্বর বিটিআরসির নথিভুক্ত না থাকায় অপরাধীরা বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমের জন্য চোরাইপথে আসা এধরনের মোবাইল ব্যবহার করে থাকে।চোরাইপথে আনা এ সকল মোবাইল চোরাকারবারিরা রাজধানীর বিভিন্ন মোবাইল বিক্রয়কারী মার্কেটে সরবরাহ করতো।

র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আবু তাহের ভারত হতে মোবাইল ফোন চোরাকারবারী এই চক্রটির মূলহোতা। তাহের গত তিন বছর পূর্বে কুমিল্লা জেলার গৌরীপুর এলাকায় একটি মোবাইল ফোনের শো-রুমে বিক্রয়কর্মী হিসেবে চাকরি শুরু করে। তখন থেকেই কুমিল্লার বিভিন্ন সীমান্ত পথে অবৈধভাবে সংঘবদ্ধ মোবাইল চোরাকারবারী চক্রের সাথে তার সখ্যতা গড়ে উঠে। একপর্যায়ে মোবাইলের শো-রুমে চাকরির পাশাপাশি সে নিজেও এসব ভারতীয় ব্রান্ডের চোরাই মোবাইলের চালান আনিয়ে কুমিল্লাসহ রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে সরবরাহ করতে শুরু করে। অল্প সময়ে সে নিজেই একটি সংঘবদ্ধ চক্র গড়ে তোলে। তার নেতৃত্বে চক্রটি কুমিল্লা সীমান্ত এলাকা দিয়ে গত দেড়মাসে এ ধরনের ৫টি বড় চালান ঢাকায় সরবরাহ করেছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।

গ্রেপ্তারকৃত মেহেদী মূলহোতা আবু তাহেরের অন্যতম সহযোগী। সে কুমিল্লা সদর দক্ষিণের বাসিন্দা। তার এক পরিচিত ভাইয়ের মাধ্যমে এই চক্রে জড়িয়েছে। 

অপর গ্রেপ্তারকৃত রুবেল একজন গাড়ি চালক। প্রথমে সে রেন্ট-এ কার এর গাড়ি ভাড়ায় চালালেও পরে তাহের এর চক্রে যোগ দেয়। তাহের তাকে একটি প্রাইভেটকার ভাড়ায় চালাতে দেয়। সে উক্ত প্রাইভেটকারটি চালানোর আড়ালে চোরাইপথে আসা মোবাইলসমূহ তাহেরের নির্দেশে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করতো।

গ্রেপ্তারকৃত নূরনবী ফেনী জেলার মহিপাল এলাকার জনৈক টিটু চৌধুরীর ব্যক্তিগত গাড়িচালক হিসেবে চাকরি করতো। তাহেরের সাথে পরিচয়ের পর অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের আশায় সে চোরাই মোবাইল ফোন পরিবহনের এই চক্রের প্রস্তাবে রাজি হয় এবং তাহেরের নির্দেশে বিভিন্ন সময় মোবাইল ফোনের চালান বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করে।