সারা বাংলা

রমেকের ডরমেটরি থেকে চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার

রংপুর মেডিক্যাল কলেজের (রমেক) আবাসিক ভবন থেকে মো. আখতারুজ্জামান (৫২) নামে এক চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুরে  মেডিক্যাল কলেজটির শেখ রাসেল পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডরমেটরি ভবনের ষষ্ঠ তলার ৬-এফ কক্ষ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতয়ালী জোন) মো. আরিফুজ্জামান লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ডা. আখতারুজ্জামান নীলফামারী সদর উপজেলার প্রতিভা নীলপাড়া গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (পিজি) হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার ও রংপুর মেডিক্যালে পোস্ট গ্রাজুয়েটের শিক্ষার্থী। তিন দিন আগে পরীক্ষায় অংশ নিতে ঢাকা থেকে রংপুরে এসেছিলেন তিনি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে শেখ রাসেল পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডরমেটরি ভবনের ষষ্ঠ তলার ৬-এফ কক্ষ থেকে রক্ত গড়িয়ে দরজার বাইরে বের হতে দেখে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক মিলনুর রহমান মিলন পুলিশকে জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা ভেঙে আখতারুজ্জামানের মরদেহ উদ্ধার করে। 

আখতারুজ্জামানের দ্বিতীয় স্ত্রী রংপুর নগরীর ধাপ শিমুলবাগ এলাকার কোহিনুর আক্তার বলেন, ‘আমার সঙ্গে তিন দিন আগে মোবাইল ফোনে আখতারুজ্জামানের কথা হয়েছে। তখন উনি গ্রামের বাড়ি নীলফামারীতে ছিলেন। উনি প্রায়ই অসুস্থ থাকতেন। কবে তিনি রংপুরে এসেছেন, সেটা আমি জানতাম না। আজ দুপুরে মৃত্যুর সংবাদ জানতে পেরে ঘটনাস্থলে এসেছি। এখন পর্যন্ত বলতে পারছি না কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে। আমাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ ছিল না। উনার প্রথম স্ত্রীর সংসারে তিন সন্তান রয়েছে।’ 

মারা যাওয়া চিকিৎসকের ভাই আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘আমার ভাই ঢাকার পিজি হাসপাতালে মেডিক্যাল অফিসার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। রংপুর মেডিক্যাল কলেজে পড়ালেখা করেছেন। এখানে তিনি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট করতে ৮ বার পরীক্ষা দিয়ে পাস করতে পারেননি। তার নবমবার পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। শারীরিক অসুস্থতার কারণে উনি মানসিকভাবে চিন্তিত ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে লিভার ও পায়ের ব্যাথাসহ কয়েকটি রোগেও ভুগছিলেন।’

রংপুর মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘ডা. আক্তারুজ্জামান পোস্ট গ্রাজুয়েটের শিক্ষার্থী ছিলেন। সকালে ডরমেটরি থেকে জানানো হয়, আক্তারুজ্জামানের কক্ষ থেকে গন্ধ আর রক্ত গড়িয়ে আসছে। বিষয়টি আমরা পুলিশ ও জেলা প্রশাসককে জানাই। একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দরজার তালা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্ত ছাড়া ধারণা করে কিছু বলা যাচ্ছে না।’ 

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতয়ালি জোন) আরিফুজ্জামান বলেন, ‘খবর পেয়ে চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছু বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’