সারা বাংলা

ঘুষের বিরুদ্ধে বলায় চাকরি গেল ইমামের, ফেসবুকে প্রতিবাদ করে সমাজচ্যুত ৪ পরিবার

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান করায় এক ইমামের চাকরি গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া এবং মন্তব্য করায় চার পরিবারকে সমাজচ্যুত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) এ ঘটনায় থানায় মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এর আগে, গত ২৯ জুন সালিশ বৈঠকে তাদের সমাজচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেয় মসজিদ কমিটি ও গ্রামের একটি প্রভাবশালী মহল।

চাঁদপুর মতলব উত্তর থানা ওসি আলমগীর হোসেন রনি বলেছেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। সমাজচ্যুত করা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো জঘন্য অপরাধ। এ ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান করায় উপজেলার ছেঙ্গারচর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডেরে একটি মসজিদের ইমামের চাকরি চলে যায়। এর প্রতিবাদে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন জোড়খালী গ্রামের বাসিন্দা সাইফুদ্দিন। সেই পোস্টে কমেন্ট করেন একই এলাকার আরও তিন পরিবারের কয়েকজন সদস্য।

ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় মসজিদ কমিটি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সম্মানহানি হয়েছে, দাবি করে এই চার পরিবারকে সমাজচ্যুত করা হয়। এরপর থেকে সমাজের লোকজন এই চার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা ও চলাফেরা বন্ধ করে দেয়।

ভুক্তভোগী সাইফুদ্দিন বলেন, ‘‘পূর্ববিরোধের জেরে কাউন্সিলর সবুজ বেপারী আমার বিরুদ্ধে এসব ষড়যন্ত্র করছেন। ফেসবুকে পোস্টে কারও নাম উল্লেখ করিনি। শুধু লিখেছি, ‘মসজিদের ইমাম পাল্টানো যায়, ঘুষখোর আর সুদখোর পাল্টানো যায় না।’’

মসজিদ কমিটির সদস্য রুহুল আমিন মিয়াজি বলেন, ‘সালিশ বৈঠকে গ্রামের ৮০ থেকে ১০০ পরিবারের সদস্য উপস্থিত ছিল। তখন চার পরিবারকে সমাজ থেকে আলাদা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’

অভিযোগের বিষয়ে কাউন্সিলর সবুজ বেপারী বলেন, ‘চার পরিবারের সদস্যরা যদি ক্ষমা চান, তাহলেই গ্রামবাসী এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে।’

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (২৮ জুন) জুমার নামাজের সময় ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান করেন মসজিদের ইমাম। এরপরই তাকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়।