সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখাসহ চার দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৭ জুলাই) বেলা ১১টা ১০ মিনিট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবরোধ শুরু করেন তারা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চলমান রয়েছে। এ সময় সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানযটের সৃষ্টি হয়। একই দাবিতে গত বৃহস্পতিবার ৩৫ মিনিট ও বুধবার পৌনে ২ ঘণ্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। এছাড়া, সোমবার ১০ মিনিট ও মঙ্গলবার ২০ মিনিট সড়ক অবরোধ করেন তারা।
রোববার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা।
মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা, ‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ এমন বিভিন্ন স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো- ২০১৮ এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে, সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে, দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার যুগ্ম আহবায়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন, আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। একটি কুচক্রী মহল বারবার বলার চেষ্টা করছে বা অপপ্রচার চালাচ্ছে আন্দোলনকারীদের মধ্যে নাকি জামায়াত-বিএনপি ভর করেছে। স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের আন্দোলন সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। আজ যদি আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হয় তাহলে সাথে সাথেই আমাদের আন্দোলন শেষ। কাজেই এটা বলার সুযোগ নেই যে আমরা কোনো দলের হয়ে কাজ করছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার সদস্য সচিব মাহফুজ ইসলাম মেঘ বলেন, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রোববার দুপুর থেকে আমাদের অবরোধের ঘোষণা ছিল। কিন্তু রথযাত্রার প্রতি সম্মানার্থে দুপুরের পরিবর্তে বেলা ১১টা থেকে অবরোধ শুরু করেছি। আমাদের এই আন্দোলন সাধারণ মানুষের, জনমানুষের আন্দোলন। দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা সমাধানের জন্য যাত্রীদের সাময়িক দুর্ভোগের জন্য আমরা দুঃখিত।