সারা বাংলা

বন্যা: ফেনীতে মৎস্যখাতে ১ কোটি ১৮ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি

ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে ফেনীর দুই উপজেলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে ৪৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানি প্রবেশ করে বিভিন্ন এলাকার পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। বন্যায় মৎস্যখাতে জেলায় প্রায় ১ কোটি ১৮ লাখ ৪৫ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শনিবার (৬ জুলাই) সকাল থেকে বন্যার পানি কমার পর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সামনে আসে।

জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিনে ফুলগাজী ও পরশুরামে বন্যায় মাছ চাষিদের অন্তত ১ কোটি ১৮ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দেড় হাজারের বেশি খামারি। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে দুই উপজেলার একক ও যৌথ মালিকানাধীন প্রায় ৩২৫টি পুকুর। এসব পুকুর থেকে ৫৭ লাখ টাকার বড় মাছ এবং ৩৭ লাখ টাকার মাছের পোনা ভেসে গেছে। এছাড়া দুই উপজেলায় খামারিদের প্রায় ২২ লাখ টাকার অবকাঠামো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, ফুলগাজী উপজেলায় ২৪৫টি পুকুর ভেসে সাড়ে ৪০ লাখ টাকার মাছ ও সাড়ে ৭ লাখ টাকার মাছের পোনা ভেসে গেছে। উপজেলায় মাছ চাষিদের ২০ লাখ টাকার আসবাবপত্র নষ্ট হয়েছে। সব মিলিয়ে ফুলগাজীতে ৬৮ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে। একইভাবে পরশুরাম উপজেলায় ৮০টি পুকুর ভেসে ১৭ লাখ ২৫ হাজার টাকার মাছ ও ৩০ লাখ ৭০ হাজার টাকার মাছের পোনা ভেসে গেছে। উপজেলায় মাছ চাষিদের অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে প্রায় আড়াই লাখ টাকা। সব মিলিয়ে পরশুরামের মৎস্যখাতে প্রায় সাড়ে ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

ফুলগাজীর উত্তর দৌলতপুর এলাকার মৎস্য খামারি মিঠু মজুমদার বলেন, নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুকুরের চারপাশে নেট জাল দিয়ে ঘিরে রেখেছিলাম। কিন্তু বাঁধ ভেঙে পানির তীব্র স্রোতে সব ভেসে গেছে। এখন পানি কমা শুরু হয়েছে। পুকুরের কোনো মাছ আছে বলে মনে হচ্ছে না।

পরশুরামের শালধরের মাছ চাষি বাদশা চৌধুরী বলেন, গত বছরের বন্যায়ও অনেক লোকসান হয়েছিল। এবারও আকস্মিক বন্যায় সবকিছু ভেসে গেছে। ক্ষতি কাটিয়ে বছর ঘুরে আসার আগেই আবার একই দশা। এভাবে লোকসান হওয়ায় অনেকেই ব্যবসায় থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। টেকসই বাঁধ নির্মাণ না হলে প্রতিবছর এই দুর্ভোগ পোহাতে হবে।

ফেনী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, বন্যার পানিতে দুই উপজেলার অন্তত ৩২৫টি পুকুর ভেসে গেছে। এতে অনেক খামারি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তথ্য পাঠানো হয়েছে। যদি কোনো সহযোগিতা আসে, সেটা খামারিদের প্রদান করা হবে।