মন্ত্রিত্ব পাবেন এমন কখনও ভাবেননি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, ‘কিন্তু হঠাৎ একটা টেলিফোন কল আমার জীবন বদলে দিয়েছে।’ এই ফোনে কলে তাকে মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়।
রোববার (৭ জুলাই) বিকালে ঢাকার ধামরাইয়ের ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রা উৎসবে যোগ দিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। দেশের প্রখ্যাত চিকিৎসক ডা. সামন্ত লাল সেন বর্তমান সরকারে টেকনোক্রাট কোটায় মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘মন্ত্রী হওয়ার পর থেকে আমার একটাই দাবি, আমি সব জায়গায় বলি, আমি স্বাস্থ্য সেবাকে তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দিতে চাই। গতকাল আমি চট্টগ্রামে গিয়েছিলাম, হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘুরতে গিয়েছিলাম। এরপর একটি কমিউনিটি মেডিকেল পরিদর্শন করেছি। আমার একটাই বক্তব্য, আমি যদি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন হেল্প সেন্টার, কমিউনিটি মেডিকেল— এসব যদি স্বাবলম্বী করতে পারি, ধামরাইয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ট্রমা সেন্টার যদি স্বাবলম্বী করতে পারি; তাহলে এই লোকগুলো কিন্তু ঢাকায় যাবে না।’
মন্ত্রী বলেন, এখানে প্রসবের আগে যে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন, তা যদি যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তাহলে প্রসবকালীন যেসব দুর্ঘটনা ঘটে, তা রোধ করা যাবে। এখানে মানুষের উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়বেটিসের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারি, তবে ঢাকায় হাসপাতালে চাপ কমবে।
তিনি বলেন, ‘তবে আমি একা পারব না। আমাদের সঙ্গে যারা আছে, সবার সহযোগিতা আমার প্রয়োজন হবে। তাহলে মানুষের চিকিৎসা ব্যবস্থা আমি একটা পর্যায়ে নিতে পারব বলে আশা করি।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এমন একটি দেশ, অসাম্প্রদায়িক দেশ। এই দেশে যখন মুসলমানদের ঈদ উদযাপন হয়, তখন হিন্দুরা পাহারা দেয়, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন, রাস্তায় পুলিশ ভাইরা পাহারা দেয়৷ আবার হিন্দুদের যখন পূজা হয়, তখন মুসলমান ভাইরা সেখানে পাহারা দেয়। এটাই বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।
উদ্বোধনী সভায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় কুমার ভার্মা বলেন, ‘প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও বাংলাদেশ তাদের নানা ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। ভৌগোলিক সম্পর্ক রয়েছে। ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরে উভয় দেশের সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। আমরা উন্নয়নের মাইলফলক স্পর্শ করেছি।’
এ সময় ঢাকা-২০ আসনের সংসদ সদস্য বেনজির আহমদ, সাবেক সংসদ সদস্য এমএ মালো, ধামরাই পৌরসভার মেয়র গোলাম কবির, ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান, ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খান মো. আব্দুল্লা আল মামুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শ্রী শ্রী যশোমাধব মন্দির পরিচালনা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নন্দ গোপাল সেনের সঞ্চালনায় এ উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিচালনা কমিটির সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জীবন কানাই দাস।
শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় তিথিতে প্রতি বছর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের রথটান অনুষ্ঠিত হয়। রথটান শুরুর মধ্য দিয়ে এটির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সাত দিন পর আগামী ১৫ জুলাই উল্টো রথের মধ্য দিয়ে এর আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। আর এ উপলক্ষে মাসব্যাপী মেলা চলবে।