সারা বাংলা

বাবুল হত্যা মামলায় পৌর মেয়র আক্কাস রিমান্ডে

রাজশাহীর বাঘায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত আশরাফুল ইসলাম বাবুল হত্যা মামলায় পৌর মেয়র আক্কাস আলীর ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার (৮ জুলাই) রাজশাহীর জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক মো. হাদিউজ্জামান তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রাজশাহী জেলা জজ আদালতের পরিদর্শক আমান উল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গত শুক্রবার গ্রেপ্তারের পর শনিবার আক্কাস আলীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। সেদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাঘা থানার পুলিশ পরিদর্শক শোয়েব খান আসামির ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিলেন। সোমবার আসামির উপস্থিতিতে রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়।

উল্লেখ্য, গত ২২ জুন আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে দলটির উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলসহ আহত হন অর্ধশতাধিক। ২৬ জুন বাবুল মারা যান। সংঘর্ষের পরই মেয়র আক্কাসসহ তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি শাহিনুর রহমান পিন্টু। দলিল লেখক সমিতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ওই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় ১০ জুন। আগের দিন ৯ জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) এসএমএস দিয়ে দলিল লেখক সমিতির নতুন কমিটি দিয়েছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম।

পরেরদিন ১০ জুন দলিল লেখক সমিতির নতুন কমিটির সভাপতি পিন্টু ও সাধারণ সম্পাদক নয়ন সরকার দায়িত্ব নিতে যান। সেদিন দলিল লেখকদের একাংশ এই কমিটির বিরোধিতা করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে কমিটিবিরোধী দলিল লেখকেরা ২০ জুন মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেন। এই মানববন্ধনে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান লায়েব উদ্দিন লাভলু ও পৌর মেয়র আক্কাস আলী। তারা দলিল লেখকদের বাড়তি টাকা আদায় বন্ধের দাবি জানান।

পরে ২২ জুন দলিল লেখক সমিতির দৌরাত্ম্য বন্ধের দাবিতে বাঘা উপজেলার সচেতন নাগরিকের ব্যানারে বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাসের সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেন। পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে একই দিন মেয়র আক্কাস আলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মানববন্ধনের ডাক দেয় বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগ। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে দুই পক্ষের কর্মী-সমর্থকরা উপজেলা চত্বরের সামনে জড়ো হলে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

এতে দুই পক্ষের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চারদিন পর তিনি মারা যান। আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল মেয়র আক্কাসের বিরুদ্ধে আয়োজন করা মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছিলেন। গত শুক্রবার (৫ জুলাই) চার সহযোগীসহ মেয়র আক্কাসকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।