বান্দরবানে রোয়াংছড়ি উপজেলার গোদারপার আর্যগুহা ধুতাঙ্গ বিমুক্তি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ড. এফ দীপংকর মহাথের (৫৩) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁর ব্যবহৃত টেবিলের উপরে একটি চিঠি পাওয়া যায়।
শনিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে উপজেলার তারাছা ইউনিয়নের গোদারপার এলাকার ওই বৌদ্ধ বিহার থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। ড. এফ দীপংকর মহাথের আর্যগুহা ধুতাঙ্গ বৌদ্ধ বিহারের ধর্মগুরু ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম ফটিকছড়ি উপজেলার ফরাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা।
বৌদ্ধ বিহারের অন্যরা জানান, প্রতিদিনের মতো রাতে ধ্যান সাধনা শেষে এফ দীপংকর মহাথের ঘুমাতে যান। সকাল থেকে দুপুরে গড়িয়ে গেলেও বিহার বন্ধ দেখতে পেয়ে অন্য ভিক্ষুরা গিয়ে তার লাশ দেখতে পান। পরে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
অন্য বৌদ্ধ ভিক্ষুরা ধারণা করছেন, ড. এফ দীপংকর মহাথের আত্মহত্যা করেছেন। তবে এটি তাদের কাছে রহস্যজনক মনে হয়েছে।
বৌদ্ধ বিহারে ভিক্ষুর শিষ্য ভুটান বড়ুয়া বলেন, এফ দীপংকর মহাথের বিহারের গুহার মধ্যে একাই থাকতেন। কয়েক দিন ধরে একটি মহল তাকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। তবে কে বা কারা হুমকি দিয়েছেন, তা তারা জানেন না।
লাশের গলায় দড়ি দেওয়া থাকলেও পা মাটিতে লাগানো থাকায় তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলেও ভুটান বড়ুয়া ধারণা করছেন।
রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পারভেজ আলী জানান, ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে চিঠি উদ্ধার করা হয়েছে। কী ঘটেছে, কেন ঘটেছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
‘আমার প্রিয় শিষ্যগণ’ সম্বোধন করে লেখা ওই চিটিতে মূলত বৌদ্ধ বিহার নিয়ে তার স্বপ্ন এবং সেই অসমাপ্ত স্বপ্ন পূরণে সবাইকে কাজ করে যেতে বলা হয়েছে। তাতে লেখা আছে, ‘আমার এই স্বপ্নগুলো পূরণ করার জন্য নিম্নোল্লিখিত ভিক্ষুদের উপর দায়িত্ব দিয়ে গেলাম। যেমন ১. প্রজ্ঞামিত্র ভিক্ষু, ২. জ্ঞানারণ্য ভিক্ষু, ৩. মেসিয় ভিক্ষু, ৪. কুশলানন্দ ভিক্ষু, ৫. বঙ্গগিরি ভিক্ষু, ৬. রুপায়তন ভিক্ষু, ৭. বিএসসি সিভিল ইঞ্জিনিয়ার সারিপুত্র ভিক্ষু, ৮. মোদগল্যায়ন ভিক্ষু, ৯. রাষ্ট্রপাল ভিক্ষু… ইত্যাদি। অন্যান্য ভিক্ষুদের নিয়ে আপনাদের মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে।’ প্রতিটা কাজ জেষ্ঠভ্রাতা নাগফেনের পরামর্শ মোতাবেক করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
চিঠির শেষাংশে শিষ্যদের ‘শাসন-অনুশাসন করার সময়’ কষ্ট পেয়ে থাকলে তার জন্য তিনি ক্ষমা চেয়েছেন।