সারা বাংলা

সাতক্ষীরার ইছামতীর বেড়িবাঁধে ধস, আতঙ্কে গ্রামবাসী

বাংলাদেশ ও ভারতের আন্তর্জাতিক সীমানা নির্ধারণী নদী ইছামতী প্রবল জোয়ারের তোড়ে কালিগঞ্জের শুইলপুর শ্মশানঘাট নামকস্থানে তিন নং পোল্ডারে ৩০ মিটার বেড়িবাঁধে ধস নেমেছে। ফাটল দেখা দিয়েছে ২৪০ মিটার জুড়ে। এতে ওই এলাকার মানুষজন বাঁধ ভেঙে ভাড়াসিমলা ও নলতা ইউনিয়নের কমপক্ষে ২০ গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন।

কালিগঞ্জ উপজেলার শুইলপুর গ্রামের আকবর আলী গাজী, শহর আলী, আফসার মোড়লসহ একাধিক স্থানীয়রা জানান, ইছামতী নদীর ভাঙন কবলিত এলাকা বসন্তপুর খাদ্য গুদাম থেকে শুইলপুর হয়ে খাঞ্জিয়া বিজিবি ক্যাম্প পর্যন্ত বিস্তৃত। এ সীমান্তের বিপরীতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণার বোলতলা ও মাহমুদপুর। কয়েক বছর আগে থেকে ভাঙন কবলিত এলাকার পাশে নদীতে সরকারিভাবে বালি উত্তোলনে অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর থেকেই বসন্তপুর খাদ্য গুদামের পার্শ্ববর্তী এলাকা ও খাঞ্জিয়া এলাকায় নদীভাঙন দেখা দেয়। যার প্রভাবে সীমান্তবর্তী কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ জনের কৃষি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

অপরদিকে ভারতের পারে চর জেগে ওঠায় বাংলাদেশের মানচিত্র পরিবর্তিত হচ্ছে। ভাঙনের ধারাবাহিকতায় শুক্রবার বিকাল থেকে শুইলপুর শ্মশানঘাট এলাকায় বেড়িবাঁধের ৩০ মিটার জুড়ে নদীতে ধসে যায়। ধসের প্রভাবে ২৪০ মিটার জুড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে।

তারা আরও বলেন, সকাল থেকে টানা বৃষ্টির কারণে এ ধস সৃষ্টি হয়েছে। আবারও টানা বৃষ্টি হলে গভীর রাতে জোয়ারে লাগলে নদীবাঁধ ভেঙে নলতা ইউনিয়নের দুড়দুড়িয়া, সেয়ারা, মাঘুরালী, নলতা, ভাড়াসিমলা ইউনিয়নের শুইলপুর, সাতবসু, ব্রজপাটুলি, দাদপুর, খারহাট, দমদমা,সুলতানপুর, পূর্ব নারায়নপুরসহ ২০টি গ্রাম প্লাবিত হতে পারে।

ভাঙন ও ফাটল দেখা দেওয়ার ৩০ ঘণ্টায়ও ধ্বস ও ফাটল প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় রাতে এলাকাবাসীকে রাত জেগে পাহারা দেওয়া ছাড়াও গবাদিপশু নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হবে।

কালিগঞ্জ উপজেলার ভাড়াসিমলা ইউনিয়ন পরিষদি (ইউপি) চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান নাহিদ বলেন, প্রবল ইছামতীর জোয়ারের তোড়ে শুইলপুর শ্মশানঘাট নামকস্থানে তিন নং পোল্ডারে ৩০ মিটার বেড়িবাঁধে ধস নেমেছে। ওই এলাকার মানুষজন বাঁধ ভেঙে ভাড়াসিমলা ও নলতা ইউনিয়নের কমপক্ষে ২০ গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন।

তিনি আরও বলেন, গত বছর এখানে ফাটল দেখা দিলে বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়। তারা কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় টানা বৃষ্টিতে এ ধস ও ফাটল দেখা দিয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর কালিগঞ্জ পোল্ডারের  সেকশন অফিসার মাসুদ রানা বলেন, হঠাৎ করে প্রায় ৩০ মিটার লম্বা জায়গা জুড়ে দেড়ফুট করে বেড়িবাঁধে ধস নামায় ও দীর্ঘ এলাকায় ফাটল দেখা দিয়েছে। তারা বর্ষা মৌসুমে সংস্কার করার জন্য বালি, বল্লম ও বাঁশসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী যোগাড় করে দ্রুত তারা কাজ শুরু করবেন।