সারা বাংলা

সিলেটে ফটো সাংবাদিক নিহতের ঘটনায় থানায় অভিযোগ

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে সিলেট নগরীর বন্দরবাজার এলাকায় গুলিতে নিহত দৈনিক নয়া দিগন্ত এর সিলেট প্রতিনিধি ও দৈনিক জালালাবাদ এর স্টাফ ফটো সাংবাদিক এটিএম তুরাব হত্যার ঘটনায় থানায় অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। 

বুধবার (২৪ জুলাই) রাতে এসএমপির কোতোয়ালী মডেল থানায় সিলেটের সাংবাদিকদের প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে লিখিত এজাহার দাখিল করেন নিহত তুরাবের বড় ভাই আবুল হাসান মো. আজরফ (জাবুর আহমদ)। এজাহারের কপি গ্রহণ করেন সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ ও কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন শিপন। 

এর আগে গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিএনপি মিছিল চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এটি এম তুরাব গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।

তুরাবের বড় ভাই লিখিত এজাহারে উল্লেখ করেন -গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) দুপুর ১ টা ৫৫ মিনিটের সময় পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য কোর্টপয়েন্টে অবস্থান করেন তুরাব। এক পর্যায়ে জুম্মার নামাজের পর বাংলাদেশ বিএনপির মিছিল শুরু করলে তুরাব মিছিলের পিছনে অন্যান্য সহকর্মীসহ অবস্থান নেয়। মিছিলটি পুরান লেন গলির মুখে পৌঁছলে সশস্ত্র পুলিশ বিপরীত দিক থেকে অবস্থান নেয়। ঐ মুহূর্তে হঠাৎ লাগাতার গুলিবর্ষণের শব্দ শুনে তখন আমার ভাই তুরাব বলে, আমাকে বাচাঁও আমাকে মেরে ফেলছে। আমার চোখে মুখে গুলি লেগেছে। একথা বলেই সে মটিতে লুটিয়ে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। তখন সাথী ও পথচারীরা ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে কর্তব্যরত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোবহানীঘাট ইবনে সিনা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। উক্ত হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা আপ্রাণ চেষ্টা করেও তাকে বাঁচাতে পারেননি। চিকিৎসারত অবস্থায় ঐদিন সন্ধা ৬টা ৪৪ মিনিটের সময় সে মৃত্যুবরণ করে।

নিহত সাংবাদিক তুরাবের ভাই উল্লেখ করেন, গোলাগুলির স্থির ও ভিডিও চিত্র কর্তব্যরত সাংবাদিকদের কাছে রয়েছে। তদন্তকালে আমরা তা উপস্থাপন করবো।

তিনি বলেন, আমি আমার ভাইয়ের দাফনসহ অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থাকায় এবং সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সাথে পরামর্শ করে এজাহার দায়ের করতে কিছুটা বিলম্ব হয়। এজাহারে উদীয়মান সাংবাদিক আবু তাহের মো. তুরাবের খুনীদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক আইনানুগ শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়।

সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সময় টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি ইকরামুল কবির বলেন, সাংবাদিক তুরাব হত্যার প্রতিবাদে সিলেটে সকল সাংবাদিক সংগঠন ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে নেমেছে। তুরাব মাত্র দুমাস আগে বিয়ে করেছিলেন। তার স্ত্রীর হাতের মেহেদী শুকানোর আগেই তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে। তার বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তার পরিবারের পক্ষ থেকে এজাহার দেওয়া হয়েছে। আমরা পরিবারের পাশে রয়েছি।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ  বলেন, নিহত তুরাবের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি এজাহার দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।