সারা বাংলা

‘সব লাইন ম্যানেজ করেই বালু উত্তোলন করি’

শেরপুরের শ্রীবরদীতে পাগলা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। এতে ভেঙে যাচ্ছে উপজেলার সিংগাবরুনা ইউনিয়নের বাবেলাকোনা, হারিয়াকোনা ও দিঘলাকোনা গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র সড়ক। সেই সঙ্গে হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশের ভারসাম্য।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বাবেলাকোনা গ্রামের পার্শ্ববর্তী মেঘাদল গ্রামের মাসুদ মিয়া, কাদির মিয়া, রাজা মিয়া ও কর্ণঝোড়া গ্রামের ইয়াছিন আলীসহ কয়েকজনের একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। অবাধে বালু উত্তোলনে ভেঙে পড়ছে নদীর দুই পাড়।

নাম না প্রকাশের শর্তে বাবেলাকোনা আদিবাসী উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, প্রতিদিন পাগলা নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আর এসব বালু বহনে ব্যবহার হচ্ছে মাহিন্দ্র। এসব মাহিন্দ্রের শব্দে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে সমস্যা হয়। তবে এসব ঘটনার কেউ প্রতিবাদ করে না। কারণ প্রতিবাদ করলে তাকে অপমানিত হতে হয়।

স্থানীয় রহিম মিয়া নামের এক কৃষক বলেন, ‘বালু উত্তোলন করায় পাগলা নদীর গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে। একইসঙ্গে নদীপাড়ের অনেক যায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বালু ব্যবসায়ী মাসুদ মিয়া বলেন, ‘বালু উত্তোলন করাই আমাদের মূল ব্যবসা। এটা ছাইড়া দিয়ে কি কইরা খামু। আর আমরা সব লাইন ম্যানেজ করেই বালু উত্তোলন করি।’

বিক্রির জন্য রাখা বালু

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়টি নিশ্চিত করে সিংগাবরনা ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের উপসহাকারী ইবনে জায়েদ বলেন, ‘বিভিন্ন পয়েন্টে বালু উত্তোলনকারীদের এজেন্ট থাকে। আমরা অভিযানে গেলে সেই খবর তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। ফলে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায় না।’

সিংগাবরনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফখরুজ্জামান বলেন, ‘বালু উত্তোলনকারীদের অনেকবার নিষেধ করেছি, কিন্তু তারা আমার কোনো কথা শোনে না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংক্রান্ত মিটিংয়েও এই বিষয়ে কথা বলেছি। তবে কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।’

শ্রীবরদী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রেজোয়ান ইফতেকার বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’