সারা বাংলা

‘আমাকে চিনে ফেলায় ছুরি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করেছি’

‘বন্ধু শাহদাতের মোটরসাইকেলযোগে আমি বোনের শ্বশুর বাড়িতে যাই। উদ্দেশ্য ছিলো বাসায় রক্ষিত স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা চুরি করা। বাসায় ঢোকার পর বোনের শাশুড়ি সাজেদা আক্তারের কাছে আলমারির চাবি চাই। এ সময় সাজেদা আকতার আমাকে চিনে ফেললে দুইজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে সাজেদা আক্তার নিচে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যান। এ সময় টেবিলের একপাশে থাকা একটি ছুরি দিয়ে তার গলা কাটি। পরে প্লাস্টিকের রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলি। এরপর আলমারি থেকে একটি নেকলেস ও নগদ ৪৩ হাজার টাকা নিয়ে পোশাক পরিবর্তন করে রক্তমাখা জামা-কাপড় ব্যাগে ভরে বাসা থেকে বেরিয়ে যাই।’

আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে এভাবে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় ছেলের স্ত্রীর ভাইয়ের হাতে খুন হওয়া সাজেদা আক্তার (৫৮) হত্যা মামলার আসামি মাদরাসা শিক্ষক তারিফুল ইসলাম (৩০)।

শুক্রবার বিকেলে মুখ্য হাকিম মাহমুদুল হকের আদালতে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক এই জবানবন্দি দেন।

এর আগে, বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার মিরসরাই পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বন্ধন ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি ভাড়া বাসায় এ হত্যার ঘটনা ঘটে। পরে বিকেলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওই দিন সন্ধ্যায় হত্যাকারী তারিফকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করেন। তারিফ নিহত নারীর বড় ছেলের স্ত্রীর ভাই।

মিরসরাই থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে মিরসরাই উপজেলার ১০ নম্বর মিঠানালা ইউনিয়নের এম মামুন চৌধুরী প্রকাশ খান সাহেবের স্ত্রী নিজ বাসাতেই খুন হন। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আসামি শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। সন্ধ্যার মধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয় খুনের সাথে জড়িত ভিকটিমের পুত্রবধূর ভাই এবং একই উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের মৌলভী নজির আহমদ আদর্শ দাখিল মাদরাসার শিক্ষক তারিফুল ইসলামকে। গ্রেপ্তারের পর তাকে শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করলে তিনি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে লোমহর্ষক স্বীকারোক্তি প্রদান করেছেন। 

তিনি জানান, ঠাণ্ডা মাথায় খুন এবং ডাকাতি করার পরও তারিফ ছিলো নির্বিকার এবং স্বাভাবিক। কিন্তু ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ এই খুনিকে শনাক্ত এবং গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তারের পর তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও ডাকাতি করা স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা। তার বিরুদ্ধে নিহতের কন্যা আছিয়া খাতুন হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরসরাই থানার এসআই আবুল খায়ের জানান, আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর আসামিকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন আদালত।