বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পানগুছি নদীর ফেরিঘাটের সংযোগ সড়ক গত কয়েকদিন ধরে পূর্ণিমার প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। জোয়ারের পানি বেড়ে প্রতিদিন রাতে ও দুপুরে প্রায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা সড়কটি ডুবে থাকে।
সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুর একটার দিকে ফেরিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, এক থেকে দেড় ফুট পানিতে সংযোগ সড়কটি নিমজ্জিত হয়ে রয়েছে। এতে যাত্রী ও যানবাহন চালকরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। কেউ কেউ পানিতে ভিজে ফেরিতে উঠছেন। ঝুঁকি নিয়ে বাস, মোটরসাইকেল, ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন ওঠানামা করছে ফেরিতে।
অতি দ্রুত সংযোগ সড়কটি উঁচু করে ভোগান্তি নিরসন করার দাবি জানিয়েছেন যানবাহন চালক ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
মইনুল ইসলাম নামে একজন মোটরসাইকেল আরোহী বলেন, প্রতিদিন পেশাগত কাজে এই ফেরিটি পার হয়ে মোরেলগঞ্জ থেকে বাগেরহাটে যাওয়া-আসা করতে হয়। গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন জোয়ারের পানিতে পূর্ব প্রান্তের ঘাটের সড়কটি ডুবে থাকছে। মোটরসাইকেল নিয়ে ফেরিতে উঠতে নামতে বেশ ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। অতিসত্বর সংযোগ সড়কটি উঁচু করে ভোগান্তি নিরসনের দাবি জানাচ্ছি।
মোহাম্মদ রিয়াজ নামে ট্রাকচালক বলেন, বাগেরহাট থেকে মালামাল নিয়ে মোরেলগঞ্জ ফেরিঘাটে এসে আটকে আছি। জোয়ারের পানি উঠে যাওয়ায় ট্রাক নিয়ে ফেরিতে উঠতে পারছি না। পানির ভেতর ট্রাক নামালে ইঞ্জিনের সমস্যা হবে এবং চাকা আটকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ট্রাক নিয়ে ভাটার অপেক্ষায় আছি। প্রতিদিন দুপুরের দিকে প্রায় দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে জোয়ারের পানি সড়কের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
মর্জিনা বেগম নামে এক নারী বলেন, মোরেলগঞ্জ শহর থেকে পূর্ব পাড়ে হাসপাতালে রোগীর জন্য খাবার নিয়ে এসেছি। ফেরি থেকে নামতে গিয়ে আমার কাপড় ভিজে গেছে। প্রতি বর্ষা মৌসুমে পানগুছি নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। এ সময়টাতে ফেরিতে ওঠার রাস্তাটি ডুবে থাকে। প্রতিদিন দুপুরের দিকে ফেরিতে ওঠানামা করতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
বুলু নামের এক ব্যক্তি বলেন, গেল এক সপ্তাহ ধরে প্রতি জোয়ারে দুই তিন ঘণ্টা ধরে পানিতে নিমজ্জিত থাকছে সংযোগ সড়কটি। ফেরি পারাপারে আমাদের খুব সমস্যা হচ্ছে, অনেক সময় পানিতে ভিজে যেতে হয়। রাত একটার দিকেও জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলে একই অবস্থা সৃষ্টি হয়। অতিদ্রুত এটা ঠিক করা দরকার।
সড়ক বিভাগ বলছে, নদীতে সব সময় একই পরিমাণ পানি থাকে না, কখনও অনেক বেশি, আবার কখনও অনেক কম পানি থাকে। যার কারণে সংযোগ সড়ক বেশি উঁচু করা যায় না। এখন যদি সড়কটি উঁচু করে দেওয়া হয় তাহলে যখন নদীতে পানি কম থাকবে তখন ফেরিতে যানবাহন ওঠানামায় সমস্যা হবে।
সড়ক বিভাগ, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, জোয়ারের পানির বিষয়টি মাথায় রেখে সংযোগ সড়ক যদি অনেক উঁচু করা হয়, তাহলে যখন পানি কম থাকবে তখন পন্টুনে যানবাহন ও পথচারীদের ওঠানামায় সমস্যা সৃষ্টি হবে। জোয়ার ও ভাটা দুটি বিষয় মাথায় রেখে সংযোগ সড়ক ও পন্টুন করতে হয়। জোয়ার ও ভাটার কারিগরি বিষয় মাথায় রেখে সংযোগ সড়কের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, পূর্নিমার জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে যে ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে, তা নিরসনের জন্য খুব দ্রুতই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।