মাছ উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা খুলনা। এ জেলা থেকে গত অর্থবছরে (২০২৩-২৪) ২ হাজার ১৪৬ কোটি টাকার মাছ ও মাছজাত দ্রব্য বিদেশে রপ্তানি হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা। সে হিসেবে গত অর্থবছর ৬৭৭ কোটি টাকার মাছ রপ্তানি কম হয়েছে। এর আগে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মাছ রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা।
অপরদিকে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ১৬ হাজার মেট্রিক টন চিংড়ি রপ্তানি হয়েছে। যার মূল্য ১ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা। অন্যান্য মাছ রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার মেট্রিক টন। যার রপ্তানি আয় ছিল ৪০০ কোটি টাকার বেশি।
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুরে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়বেদ পাল এ তথ্য জানান। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের এবারের প্রতিপাদ্য ‘ভরবো মাছে মোদের দেশ, গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ’।
মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তৃতায় খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, ‘মাছচাষ করতে গিয়ে অন্য চাষাবাদের যেন ক্ষতি না হয় সেদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। মৎস্য সম্পদ অধিক উৎপাদনের ক্ষেত্রে মান যেন বজায় থাকে সেদিকেও দৃষ্টি রাখতে হবে। গণমাধ্যমকর্মীরা এ কাজে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সহযোগিতা করবেন।’
সভায় জানানো হয়, খুলনা জেলায় ২৬ লাখ জনসংখ্যার বিপরীতে মোট মাছের উৎপাদন ১ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিকটন। দৈনিক মাছ গ্রহণের চাহিদা মাথাপিছু ৫০ গ্রাম। মোট মাছের চাহিদা ৫৭ হাজার মেট্রিকটন। সেক্ষেত্রে খুলনায় মাছ উদ্বৃত্ত থেকে যায় ৬৮ মেট্রিক টনের অধিক। খুলনায় ইলিশ আহরণের পাশাপাশি বাগদা ও গলদা চিংড়িসহ ব্যাপকভাবে তেলাপিয়া, কাঁকড়া ও কুচিয়ারও চাষ হয়।
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. নাজমুল হুসেইন খাঁন, খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য অফিসার ম. জাভেদ ইকবাল, খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) থেকে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ শুরু হবে। এদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মাইকিং, ব্যানার ফেস্টুনের মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা করা হবে। ৩১ জুলাই সকাল ৯টায় খুলনা নগরীর শহিদ হাদিস পার্ক পুকুরে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ, সাড়ে ৯টায় হাদিস পার্ক থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পর্যন্ত বর্ণাঢ্য র্যালি এবং পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা, সফল মৎস্য চাষি, ব্যক্তি, উদ্যোক্তা এবং প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার প্রদান করা হবে।